close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
চাকরিচ্যুতির হুলঝড়: ক্ষমতা নেওয়ার প্রথম দিনেই চারজন বরখাস্ত, হাজারো কর্মকর্তার হুমকিতে ট্রাম্প


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। গতকাল শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি চারজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। পাশাপাশি, হাজারো কর্মকর্তাকে বরখাস্তের হুমকি দিয়ে কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ব্যবস্থাপনায় এক বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
প্রথম দিনেই বরখাস্তের ঘোষণা
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ বরখাস্তের ঘোষণা দিয়ে জানান, তাঁর পূর্বসূরির নিয়োগকৃত চারজন শীর্ষ কর্মকর্তা আর দায়িত্বে নেই। বরখাস্ত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন:
হোসে আন্দ্রেজ: প্রেসিডেন্ট’স কাউন্সিল অন স্পোর্টস, ফিটনেস অ্যান্ড নিউট্রিশনের সদস্য।
মার্ক মিলে: ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের সদস্য।
ব্রায়ান হুক: উইলসন সেন্টার ফর স্কলার্সের প্রভাবশালী সদস্য।
কেইশা ল্যান্স বটমস: এক্সপোর্ট অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
ট্রাম্প তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেন, “এই ঘোষণা উল্লিখিত চারজনের বরখাস্তের দাপ্তরিক নোটিশ হিসেবে গণ্য হবে। আরও অনেকের জন্য শিগগির বরখাস্তের নোটিশ আসছে।”
হাজারো কর্মকর্তা বরখাস্তের পরিকল্পনা
শুধু চারজনকে বরখাস্ত করেই থেমে থাকেননি ট্রাম্প। তিনি এক হাজারের বেশি কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন। ট্রাম্পের মতে, এই কর্মকর্তারা তাঁর “মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন” দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নন। তাদের সরিয়ে তিনি দক্ষতাকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারি ব্যয় সংকোচনের প্রক্রিয়া চালাবেন।
সরকারি ব্যয় সংকোচন ও নতুন পরিকল্পনা
নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই ট্রাম্প সরকারি ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিলেন। ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই তিনি ঘোষণা দেন, সরকারি কাজে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কিছু দপ্তর পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। পাশাপাশি, নতুন একটি ব্যয় সংকোচন বিভাগ চালু করার পরিকল্পনাও করেছেন। এই বিভাগের নেতৃত্ব দেবেন মার্কিন প্রযুক্তি খাতের ধনকুবের ইলন মাস্ক।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রশাসনিক অস্থিরতার সম্ভাবনা
ট্রাম্পের কঠোর সিদ্ধান্তে সরকারি দপ্তরগুলোতে অস্থিরতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।
নানা আদেশে স্বাক্ষর
ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম দিনেই ট্রাম্প একাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
ক্যাপিটলে দাঙ্গায় গ্রেপ্তার ১,৫০০ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ।
সরকারি অফিসে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ সুবিধা বাতিল।
ট্রাম্প প্রশাসনের ভবিষ্যৎ
ক্ষমতার প্রথম দিনেই নেওয়া পদক্ষেপগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের আগাম ইঙ্গিত দিচ্ছে। সরকারি খাতের সংস্কার এবং ব্যয় সংকোচন কার্যক্রমে তাঁর নেওয়া পদক্ষেপগুলো বিতর্ক সৃষ্টি করবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে ট্রাম্পের এই কার্যক্রমে তাঁর সমর্থকরাও উচ্ছ্বসিত।নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সিদ্ধান্তগুলো দিয়ে প্রথম দিনেই প্রমাণ করেছেন, তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তবে তাঁর সিদ্ধান্তগুলো যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রশাসনিক অস্থিরতা এবং বিতর্কের জন্ম দেবে, তা বলাই বাহুল্য। আগামী দিনে কীভাবে তিনি পরিস্থিতি সামলাবেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
No comments found