close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

বর্ষায় শীতের আমেজ, কুয়াশার চাদরে ঢাকলো পঞ্চগড়

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Chilly surprise in monsoon! Panchagarh wakes up under thick fog, baffling locals with winter vibes in July—unseen in the past 50 years.

বর্ষাকালের মাঝেও পঞ্চগড়ের ভোরে হঠাৎ শীতের আমেজ! বুধবার সকালে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে পুরো জেলা। ৫০ বছরেও এমন দৃশ্য দেখেননি স্থানীয়রা।

পঞ্চগড়ে বর্ষাকালের মাঝেও বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে যেন শীতের আগমন ঘটে। ভ্যাপসা গরমের মধ্যে ভোরবেলা হঠাৎ করেই ঘন কুয়াশার দেখা মেলে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের চমকে দেয়। ভোর ৬টা পর্যন্ত কুয়াশার কারণে আশপাশ ঢাকা পড়ে যায়, প্রকৃতি যেন হঠাৎ করেই রূপ নেয় এক শীতকালীন সকালে।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মঙ্গলবার গভীর রাত থেকেই আবহাওয়ায় এক অদ্ভুত পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। রাত বাড়তেই চারপাশে ঘন কুয়াশা নেমে আসে। অনেক প্রবীণ বাসিন্দা জানান, গত ৫০ বছরেও এমন দিনে কুয়াশা দেখেননি তারা। কারো মতে এটি একেবারে অস্বাভাবিক, কেউ বলছেন এটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাস, গাছের পাতা এবং ধানখেতের উপর শিশির জমে আছে। কুয়াশার মধ্যে দিয়ে চলাচল করছিল মানুষজন, যেন জানুয়ারির কোনো সকাল। এই আবহাওয়ায় অনেকেই ঘর থেকে বেড়িয়ে সেই বিরল দৃশ্য উপভোগ করেন। বিশেষ করে ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে এই 'বর্ষাকালীন শীতের'।

তবে সকাল ৮টার পর সূর্য উঁকি দেয় এবং রোদের তীব্রতা বাড়তে থাকে। ফলে তাপমাত্রা আবারও স্বাভাবিক বর্ষাকালীন অবস্থায় ফিরে আসে। কিন্তু ততক্ষণে সকালের সেই কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ মন ছুঁয়ে যায় পঞ্চগড়বাসীর।

এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, বর্তমানে মৌসুমি বায়ু অতিরিক্ত সক্রিয় হওয়ায় এবং বায়ুমণ্ডলে ধূলিকণার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় এই ধরনের কুয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাতাসে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে কুয়াশার রূপ নেয় এবং কখনো কখনো তা হালকা বৃষ্টিতে রূপান্তরিত হয়। তবে বৃষ্টিপাত খুব বেশি ছিল না।

তিনি আরও বলেন, বুধবার সকাল ৬টা ও ৯টায় পঞ্চগড়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজকের তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৫ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি। তবে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে উত্তরাঞ্চলে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।

অন্যদিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রোকনুজ্জামান এই কুয়াশার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, “রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। এই জলীয় বাষ্প যখন ঘনীভূত হয়, তখন তা ক্ষুদ্র জলকণায় পরিণত হয়ে কুয়াশা সৃষ্টি করে।”

জলবায়ু পরিবর্তনের এ ধরণের অস্বাভাবিক আবহাওয়া আরও বাড়বে কিনা, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা না গেলেও, আবহাওয়াবিদরা বলছেন এটি একটি ‘সতর্ক সংকেত’। মানুষের জীবনধারা, প্রাকৃতিক ভারসাম্য এবং কৃষিকাজে এই পরিবর্তনের বড় প্রভাব পড়তে পারে।

לא נמצאו הערות