close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

বরিশালে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে রফিকের রমরমা জুয়ার আসো..

Md Rakib avatar   
Md Rakib
মোং রাকিব
সদোর উপোজেলা প্রতিনিধি বরিশাল

বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্পটে প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে প্রতিনিয়তই চলছে রমরমা জুয়ার আসর। জুয়া ছোট শব্দ হলেও মানুষকে নিঃস্ব করার অসীম ক্ষমতা রয়েছে। জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে প্রতিনিয়ত পারিবারিক অশান্তিসহ সামাজিক সমস্যা বাড়ছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় রাত হলেই বসছে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলার আসর। ওয়ান-টেন, তিন তাস, কাটা-কাটিসহ নানা নামে চলছে জুয়া। বরিশাল নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় অফিস, বাসা-বাড়িতে চলছে এসব জুয়ার আসর। এতে ভুক্তভোগীরা সর্বস্বান্ত হলেও জুয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আয়োজক চক্র।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়- নগরীর ২৯ নং ওয়ার্ডস্থ বাঘিয়া এলাকায় একটি ফ্লাট বাসায় জুয়ার আসর বসাচ্ছে রফিকুল ইসলাম রফিক নামে এক ব্যক্তি। সেখানে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলার আসর বসে। জেলা শহরের বাইরে থেকেও প্রাইভেট গাড়ি পাঠিয়ে খেলোয়াড় সংগ্রহ করার পরই টাকার ব্যাগ নিয়ে দাঁড়ায় ওয়ান টেন বোর্ডের সামনে। সেখানে শেষ রাত পর্যন্ত চলে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা। এসকল জুয়ার আসরে অবাধে চলে মাদক সরবরাহ। এমনকি বড় বড় জুয়ারিদের মনরঞ্জনে দেয়া হও নারীও।

কোন কোন সূত্রের দাবী- জুয়া খেলায় জোশ আনতে সরবরাহ করা হয় নারীর সাথে মদ। সেই সাথে কাটুন কাটুন বেনসন সিগারেট বিলিয়ে দিয়ে সুখটানে ধোয়া উড়ার সাথে সাথে ওয়ান টেন বোর্ডে পিন গাথার টার্গেট নিয়ে এই ভাগ্যের খেলা শুরু হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে খেলোয়াড়রা নিঃস্ব হলেও গড ফাদাররা বানিয়েছে গাড়ি-বাড়ি। তা না হলেও অন্তত ভালো আছে আর্থিক স্বচ্ছলতায়।

বরিশাল ক্রাইম নিউজের অনুসন্ধানে জানা যায়- বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বিল্ববাড়ি এলাকার রফিকুল ইসলাম রফিক নামে এক ব্যক্তির প্রতক্ষ্য মদদে বসছে এ জুয়ার আসর। এ জুয়ার আসরে মূলত ওয়ান-টেন খেলাটাই বেশি জনপ্রিয় বলে জানা যায়। জুয়াড় আসর বসানোর পর সড়কের দুই মাথায় ক্যাডাররূপী যুবকদের পাহারার দায়িত্ব দেয়া হয়। এমনকি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন তারা। স্থানীয় কয়েকজনকে ম্যানেজ করে ওই ফ্লাটটি ভাড়া নিয়ে জুয়ার আসর বসায়।

এরআগে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নগরীর রুপাতলীর তুরাগ পেট্রোল পাম্পের পিছনে বাচ্চু মুন্সির ভাড়াটিয়া বাসায় অভিযান চালিয়ে রফিককে আটক করেছিল কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। এছাড়াও ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্য হিসেবে রফিককে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

জানা গেছে- প্রভাবশালীদের মদদে বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে জুয়াড়িদের কাছ থেকে আয়োজকরা টাকা আদায় করে। আর এর বিনিময়ে জুয়া খেলার জন্য বিকাশ, নগদ টাকা ধার, বন্ধক, মোবাইল, ঘড়ি, স্বর্ণ, মাদকসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে আয়োজকরা। এতে করে সর্বস্বান্ত হচ্ছে আসক্তরা আর লাভবান হচ্ছে আয়োজকরা।

জানা যায়, জুয়ার বোর্ডে ২০ হাজার টাকার পণ্য ২ হাজার টাকায় পাওয়া যায়। আয়োজকরা ম্যানেজ পন্থা অবলম্বন করে দিনের পর দিন চালাচ্ছে এসব অপকর্ম। আয়োজকদের নির্ধারিত মাইক্রোবাসে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে জুয়ারিদের এসব স্পটে আনা নেয়ার ব্যবস্থা করা হয় বলেও জানা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জুয়া খেলায় অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি জানায়- দিনে-রাতে অবাধে ওয়ান টেন জুয়া খেলা হয়। বিভিন্ন জেলার জুয়ারী ও মাদক সেবীরা নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে। বিষয়টি পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসীসহ সবাই জানে।এলাকায় তেমন কেউ নেই যে প্রতিবাদ করবে। যদি কেউ সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে প্রতিবাদ করতে চায় বেঁচে থাকতে পারবে না বলে হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম রফিক মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন- বরিশালে অবাধে জুয়া চলে বিষয়টি আমি জানি। কিন্তু আমি জুয়ার সাথে জড়িত নই, তবুও দোষ আমার মাথায় ওঠে।

এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন শিকদার বলেন- বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

Комментариев нет