close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

বোতল না গুলি? ডিবি'র জেরায় উত্তাল জবি, শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি—ইসতিয়াকের কিছু হলে ঘেরাও হবে গোটা ডিবি অফিস!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসতিয়াককে বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় আটক করায় উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি—তদন্ত ছাড়া শাস্তি দিলে ডিবি অফিস ঘেরাও করা হবে! আন্দোলনে নতুন মাত্রা, উত্..

ঢাকার রাজপথে ফের উত্তাল ছাত্র আন্দোলন। ‘বোতলকাণ্ডে’ আটক শিক্ষার্থী ইসতিয়াককে কেন্দ্র করে এবার উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ডিবি অফিস। শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি—বিনা তদন্তে যদি কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাহলে গোটা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) অফিস ঘেরাও করা হবে। এমন হুমকি যে কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা আজ (শুক্রবার) দুপুরে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে।

ঘটনার শুরু বুধবার রাতে। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম যখন কাকরাইল মসজিদের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন হঠাৎ করে একটি পানির বোতল ছুড়ে মারা হয় তাঁর দিকে। বোতলটি গিয়ে সরাসরি তাঁর মাথায় লাগে। এরপরেই শুরু হয় আলোচিত ‘বোতলকাণ্ড’। পরদিনই একজন শিক্ষার্থীকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের দাবি, আটককৃত শিক্ষার্থীর নাম ইসতিয়াক, যিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। তাঁকে তদন্তের নামে তুলে নেওয়া হলেও, এই ঘটনায় অন্যরকম উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্দোলনকারীরা।

প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে জবি ক্যাম্পাস

জবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আরিফিন বলেন, “ইসতিয়াক আমাদের ছোট ভাই। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই—আমাদের ভাইয়ের যদি একটি আঁচড়ও লাগে, তাহলে গোটা ডিবি অফিস ঘেরাও করা হবে।”

ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী অনিন্দ্য রায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রাষ্ট্র যদি একটি বোতলের বিপরীতে টিয়ারশেল, গুলি আর রক্তকে দাঁড় করায়—তাহলে সেটা হবে অন্যায়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমাদের সহপাঠীর কোনো ক্ষতি হলে আন্দোলন হবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে।”

তাঁরা এটাও বলেন যে, এমন ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের অধিকার হুমকির মুখে পড়েছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমাতে রাষ্ট্রযন্ত্র যেভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে স্বাধীনভাবে প্রতিবাদ করার পথ আরও সংকুচিত হবে।

ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া শিক্ষার্থী কী অবস্থায় আছেন?

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, “তাকে (ইসতিয়াক) শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে। তাকে তার অভিভাবকের নিকট হস্তান্তর করা হবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে।”

তবে শিক্ষার্থীরা এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন। তাঁরা দাবি করছেন—ইতোমধ্যে ইসতিয়াককে ভেতরে শারীরিক ও মানসিক চাপে রাখা হয়েছে। তাঁরা এই ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত ও দ্রুত তার মুক্তি দাবি করছেন।

চার দফা দাবি পেশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

এই ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত বা প্রতিক্রিয়াস্বরূপ, শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে চার দফা দাবি উত্থাপন করেছেন:

  1. আবাসন সমস্যা: যতদিন না পর্যন্ত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হচ্ছে, ততদিন ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

  2. বাজেট অনুমোদন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন দিতে হবে।

  3. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

  4. বিচার দাবি: শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

সরকারপক্ষের প্রতিক্রিয়া কী?

সরকারি কর্মকর্তারা এই বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেননি। তবে মাহফুজ আলমের ওপর বোতল নিক্ষেপের ঘটনাকে ‘উসকানিমূলক’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ছাত্র আন্দোলন যেন আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটায়, সে ব্যাপারে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

 

শিক্ষার্থীরা সরাসরি হুমকি দিয়েছে—ইসতিয়াকের কিছু হলে শুধু ডিবি অফিস নয়, গোটা শহরেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কিভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং সত্যিই কি এই ‘বোতলকাণ্ড’ আরেকটি বড় ছাত্র-আন্দোলনের সূচনা হবে কিনা।

کوئی تبصرہ نہیں ملا