close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
বোরো চাষে বড় সংকট! রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমির অর্ধেকই পড়বে পতিত, খাদ্য সংকটের আশঙ্কা


রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আট উপজেলা এবং ২৬টি ইউনিয়নে ভূ-গর্ভের পানির স্তর বিপজ্জনকভাবে নিচে নেমেছে। বর্তমানে এসব অঞ্চলের প্রায় সব গভীর নলকূপই অকেজো হয়ে পড়েছে, যার ফলে কৃষকদের জন্য সেচের অভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) নতুন একটি সেচ নীতিমালা কার্যকর করেছে, যা বোরো চাষে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে একটি গভীর নলকূপ সর্বোচ্চ ৯৮০ ঘণ্টা চলবে, অথচ এক বছর ধরে একটি গভীর নলকূপ চালানোর নির্ধারিত সময় ১,৯৬০ ঘণ্টা। এর ফলে, একদিকে যেমন সেচের সংকট তীব্র হচ্ছে, তেমনি কৃষকেরা এখন তাদের জমির সেচ সুবিধা হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নওগাঁ জেলার প্রায় অর্ধেক জমিতে এবার বোরো চাষ করা যাবে না।
বিএমডিএর এই নতুন নীতিমালার কারণে, যে জমিতে এ বছর বোরো চাষ হবে, পরবর্তী বছর সেখানে সেচনির্ভর অন্যান্য ফসল চাষ করতে হবে। এর ফলে অনেক জমি পতিত থাকতে পারে, যা খাদ্য সংকটের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কৃষকরা জানাচ্ছেন, বিএমডিএর নতুন নিয়মের কারণে অনেক কৃষক হতাশ হয়েছেন এবং তারা জমি তৈরির কাজ শুরু করতে গিয়ে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
এদিকে, ১ ডিসেম্বর থেকে মাঠে মাঠে বিএমডিএ নতুন সেচ নীতিমালার বিষয়ে লিফলেট এবং প্রচারপত্র বিতরণ শুরু করেছে, যাতে কৃষকরা অবহিত হন। তবে, এই নীতিমালা ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে কার্যকর হবে এবং এতে কোন সমন্বয় না করলে খাদ্য উৎপাদনে বড় ধরণের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, "আমরা বিষয়টি শুনেছি এবং বিএমডিএকে পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেছি। নতুন নীতিমালা গ্রহণের কারণে হাজার হাজার হেক্টর আবাদযোগ্য জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা রয়েছে।"
এছাড়া, বর্তমানে রাজশাহী, নওগাঁ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএমডিএর অধিভুক্ত এলাকায় মোট ১৫ হাজার ৯৬৫টি গভীর নলকূপ রয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রায় ৫৬ হাজার নলকূপের কারণে ভূ-গর্ভের পানি নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছে। কৃষকেরা বলছেন, এসব অবৈধ গভীর নলকূপগুলোর কারণে জলস্তর সংকটে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে আগামী দিনগুলোতে খাদ্য সংকট আরও তীব্র হতে পারে, যা পুরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
No comments found