close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” নামটা আমি প্রস্তাব করেছিলাম: হান্নান মাসউদ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবারও ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল! কোটা পদ্ধতির পুনর্বহাল রায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রদের তীব্র প্রতিবাদ চলছে। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামের ব্যানারে জোরালো কর্মসূচির সূচনা—এ আন্দোলনের পেছনে..

রাজপথে আবারও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা পদ্ধতির পুনর্বহাল রায়ের বিরুদ্ধে ফের আন্দোলনে নামলেন। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে নতুনভাবে সংগঠিত এ প্রতিবাদ এখন কেবল ঢাবিতে সীমাবদ্ধ নেই—এটি ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও।

আন্দোলনকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের যে সরকারি সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের রায়ে স্থগিত হয়েছে, সেটিই তাদের রাস্তায় নামার কারণ। তারা বলছেন, এই রায়ের মাধ্যমে শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী বৈষম্যের দ্বার খুলে দেওয়া হয়েছে।

পহেলা জুলাই সকাল থেকেই উত্তপ্ত হতে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল। এরপর শত শত শিক্ষার্থী রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমবেত হয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্লোগানে মুখরিত করেন পুরো এলাকা।

এই আন্দোলনের নতুন ব্যানার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামটি যে শিক্ষার্থী দিয়েছেন, তিনি হলেন হান্নান মাসউদ—একজন নেতা হিসেবে ইতোমধ্যেই ছাত্রদের মাঝে পরিচিত। আন্দোলনের দিকনির্দেশনা ঠিক করতে ২৮ ও ২৯ জুন ধারাবাহিক বৈঠকের পরই এ ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হন শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবি, এ আন্দোলন শুধুমাত্র কোটা বাতিল নয়—এটি হচ্ছে সাম্যবাদের প্রশ্নে একটি বড় প্রতিবাদ। যেখানে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, শিক্ষা ও প্রতিযোগিতার স্বচ্ছতা চাওয়া হচ্ছে।

ঈদের বিরতির কারণে ১২ জুনের পর সাময়িক স্থগিত থাকলেও, ১ জুলাই থেকে ফের দ্বিগুণ উদ্যমে রাজপথে ফিরেছেন আন্দোলনকারীরা। ৩০ জুন পর্যন্ত সরকারকে তারা আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। কিন্তু আশানুরূপ কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা বলছেন, এবার আন্দোলন হবে দেশব্যাপী এবং দীর্ঘমেয়াদি।

দুই থেকে তিন দিনের নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন ছাত্ররা। এর মধ্যে রয়েছে মানববন্ধন, গণসংযোগ, অনলাইন প্রচারণা এবং প্রয়োজনে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মতো কঠোর কর্মপন্থা।

তাদের হুঁশিয়ারি—যদি দ্রুত সমাধান না আসে, তাহলে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়বে।

আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি হলো, কোটা পদ্ধতি যদি থাকেই, তবে তা যেন হয় যৌক্তিক ও সময়োপযোগী। তারা বলছেন, স্বাধীনতার অর্ধশতক পার হলেও আজও কিছু চিরাচরিত ধারা দিয়ে চাকরি বা শিক্ষায় প্রবেশাধিকার নির্ধারিত হয়—এটা অগ্রহণযোগ্য।

তারা স্পষ্ট করে বলছেন—"আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তান, কিন্তু আমরা চাই না মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান পরিচয়ে অন্য কাউকে বঞ্চিত করা হোক। সুযোগ-সুবিধা হোক বাস্তবতা ও প্রয়োজন অনুযায়ী।

বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে কোটা ইস্যু বহুদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এবার যে ভাষায় ও পরিকল্পনায় মাঠে নেমেছে, তা শুধু সরকারের জন্য নয়, গোটা সমাজের জন্যই এক কঠিন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে—আমরা কি সত্যিই সাম্যের সমাজ চাই?

এখন দেখার বিষয়, সরকার কত দ্রুত ও কীভাবে এই আন্দোলনের জবাব দেয়।

Hiçbir yorum bulunamadı


News Card Generator