২০২৫ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা যমুনা নদীতে নির্মিত রেল সেতুর নাম পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ সরকার। রাজধানী ঢাকা ও দেশের উত্তরাঞ্চলকে যুক্ত করা এই গুরুত্বপূর্ণ রেল সেতুর নাম এখন থেকে আর 'বঙ্গবন্ধু রেল সেতু' থাকবে না। এর পরিবর্তে নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘যমুনা রেল সেতু’।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, "যমুনা নদীতে নির্মিত রেল সেতুর নাম বঙ্গবন্ধু রেল সেতু থাকছে না। এটি এখন ‘যমুনা রেল সেতু’ নামেই উদ্বোধন করা হবে।"
এটি উদ্বোধন হতে পারে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে। বর্তমান সেতুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আফজাল হোসেন আরও জানান, যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুতে বর্তমানে মিটারগেজের রেল সংযোগ রয়েছে। এখানে সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৭০ কিলো-নিউটন/মিটার ওজন বহনের অনুমতি রয়েছে, এবং ট্রেনে অধিক বগি যুক্ত করা সম্ভব নয়। এ সেতুতে একমাত্র রেল লাইন থাকায় ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে থাকে ট্রেন। ফলে, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সেতু পার হতে ট্রেনের ২৫ মিনিটের মতো সময় লাগে। দুই পাড়ের স্টেশনে সিগন্যালের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়, যার ফলে ৫ কিলোমিটার পথ পার হতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে।
রেল খাতের চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে তিনি আরও জানান, রেলে ইঞ্জিন সংকট রয়েছে, ফলে নতুন ট্রেন চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে পাবনাবাসীর জন্য নতুন ট্রেন চালু করার অনুরোধ করা হয়েছে, এবং এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।
এছাড়া, ২০২০ সালের ৩ মার্চ, বিগত সরকার বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর পাশে ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে। শুরুতে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা হলেও পরবর্তীতে প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয় এবং এর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা এবং জাপানের জাইকা থেকে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়।
এখন নতুন নামের সেতুটি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, এবং এর উদ্বোধনের পর এটি উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ আরও সহজ ও দ্রুততর করবে।
कोई टिप्पणी नहीं मिली