নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকা আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। শহরের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা, অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও দলীয় কোন্দলের জেরে ঘটে গেল ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ড। সিটি কর্পোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির দুই গ্রুপের রেষারেষি পরিণত হয় খুনে। প্রাণ হারিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. আব্দুল কুদ্দুসসহ আরও একজন।
এই জোড়া খুনের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. হান্নান সরকারকে তার দুই ছেলে জুনায়েদ ও ফারদিন এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য বাবু শিকদারসহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে গাজীপুর জেলার গাজীপুরা ও আশপাশের এলাকায় একাধিক অভিযান চালিয়ে চার আসামিকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় আব্দুল কুদ্দুস হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত মামলা রয়েছে।
ওসি লিয়াকত আরও বলেন, “গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা তদন্তে সহায়তা করছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। একপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন মো. হান্নান, অন্যদিকে কুদ্দুস ছিলেন প্রতিপক্ষের সক্রিয় সদস্য। সংঘর্ষের আগের দিন রাতেও এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন সকাল থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছিল। পরবর্তী সময়ে তা হাতাহাতি এবং অবশেষে প্রাণঘাতী হামলায় রূপ নেয়। স্থানীয় শাহী মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় কুদ্দুসকে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়, যার ফলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা আদালতে মামলা দায়ের করেন, যার ভিত্তিতে পুলিশ অভিযানে নামে এবং একে একে চার আসামিকে আটক করে।
এলাকাবাসী বলছেন, রাজনীতির নামে এমন সহিংসতা তাদের জনজীবনকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতির শুদ্ধচর্চার অভাবে ও দলীয় অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার কারণে বারবার সাধারণ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন।
এখন অপেক্ষা মামলার তদন্ত ও বিচারের রায়ের দিকে, যাতে এই নির্মম খুনের বিচার পায় এবং এলাকাবাসী ফিরে পায় স্বস্তি ও নিরাপত্তা।
		
				
			


















