জামালপুরের সারমারা গ্রামের সাইদুর হক, যিনি সামাজিক মাধ্যমে শান্ত মির্জা নামে পরিচিত, একজন পেশাদার প্রতারক হিসেবে ধরা পড়েছেন। তিনি ভুয়া ডিবি অফিসারের ছদ্মবেশ ধারণ করে নারীদের প্রতারণা করতেন। সামাজিক মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক ও টিকটকে পুলিশের পোশাক পরে ছবি আপলোড করে নিজেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন সদস্য হিসেবে জাহির করতেন। তার পরিচয় ভুয়া হলেও সাধারণ মানুষ তাকে সন্দেহ করত না।
সাইদুরের প্রতারণার জালে ধরা পড়েন শরীয়তপুর জেলার দুই সন্তানের জননী জেসমিন আক্তার। সাইদুর নিজেকে ডিবি পুলিশের এসআই এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মির্জা আজমের পুত্র হিসেবে পরিচয় দেন। জেসমিনকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং নারায়ণগঞ্জের একটি কাজী অফিসে তাকে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের পরদিনই সাইদুর গাজীপুরে জেসমিনকে রেখে পালিয়ে যান। জেসমিন পরবর্তীতে সাইদুরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে প্রতারণার বিষয়টি উদঘাটন করেন।
শুধু জেসমিন নয়, সাইদুর এর আগেও বহুবার এমন প্রতারণা করেছেন। দেওয়ানগঞ্জের পার রামরামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ভাই সেজে সরকারি অনুদানের নাম করে ৫০ জনের কাছ থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় জনগণ তার প্রতারণা বুঝতে পেরে তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।
সাইদুরের প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা সত্ত্বেও তার শিক্ষাগত যোগ্যতা মাত্র তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। গ্রামবাসী জানায়, সাইদুরের পেশা সম্পর্কে তারা অবগত ছিল না। আইফোন ১৩ প্রোম্যাক্স এবং অন্যান্য দামি গ্যাজেট হাতে নিয়ে চলাফেরা করলেও তার আসল পরিচয় জানতেন না তারা।
এলাকাবাসী এবং ভুক্তভোগীরা সাইদুর ও তার প্রতারণা চক্রের সদস্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া পরিচয়ে প্রতারণাকে সাইবার অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তারা। এই ঘটনা সমাজে ডিজিটাল প্রতারকদের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা প্রকাশ করে।