রাজিবপুরে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও অডিও ফাঁসের ঘটনায় জামায়াতের সহযোগী সংগঠনের উপজেলা সভাপতি আনিসুর রহমানকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায় চাঞ্চল্যকর চাঁদা দাবির অভিযোগে জামায়াতের সহযোগী সংগঠনের এক নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আনিসুর রহমান নামের ওই ব্যক্তি শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাজীবপুর উপজেলা সভাপতি ছিলেন। এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মামলা থেকে অব্যাহতির আশ্বাসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। পরবর্তীতে তার কথোপকথনের অডিও ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আজিজুর রহমান। শুক্রবার (১৮ জুলাই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি জানান, সংগঠনের দায়িত্বশীলরা ঘটনাটি তদন্ত করে সাময়িকভাবে আনিসুর রহমানকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জেলা জামায়াতের আমিরের নির্দেশক্রমে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে জামায়াতের রাজীবপুর উপজেলা কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় এক ব্যবসায়ীকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে আনিসুর রহমান চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ উঠে। ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডটি ১ মিনিট ২১ সেকেন্ডের এবং ভিডিওটি ১ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের, যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ইত্তেফাকসহ একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি ভুয়া স্কুল প্রতিষ্ঠা করে ২১টি পরিবারকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। এসব অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর সংগঠন এ বিষয়ে গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখে এবং আনিসুরকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়।
তবে অভিযুক্ত আনিসুর রহমান দাবি করেছেন, তিনি এখনো বহিষ্কারের কোনো লিখিত নোটিশ পাননি। তার ভাষ্য, “আমি দল থেকে এখনও কিছু জানিনি, কোনো চিঠিও পাইনি।” এদিকে, উপজেলা জামায়াত সেক্রেটারি আজিজুর রহমান স্পষ্ট করে বলেন, আনিসুর রহমান আসলে জামায়াতের মূল সংগঠনের কেউ নন, বরং তিনি একটি সহযোগী সংগঠনের কর্মী মাত্র। তবুও অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় এনে তদন্ত প্রক্রিয়া চালু রাখা হয়েছে।
এই ঘটনাটি জামায়াতের অভ্যন্তরীণ নীতিগত অবস্থান এবং সুশৃঙ্খল কার্যক্রমের প্রশ্ন তুলেছে। দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করে জামায়াত হয়তো একটি বার্তা দিতে চাচ্ছে যে, কোনোভাবেই নেতার অপকর্ম বরদাস্ত করা হবে না।
তবে সংশ্লিষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন এবং দলীয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত এই বহিষ্কার কতটা স্থায়ী বা প্রভাবশালী হবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।