বিশ্বে এক নতুন বিপর্যয়ের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা সতর্ক করেছেন, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে এক শক্তিশালী সৌরঝড়, যা বৈশ্বিক পরিসরে ব্যাপক বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরনের সৌরঝড় পৃথিবীতে আঘাত হানলে আমাদের আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এই সৌরঝড়ের তীব্রতা এমন হতে পারে যে, ১৮৫৯ সালে ঘটে যাওয়া ‘ক্যারিংটন ইভেন্ট’-এর চেয়েও তা ১০ গুণ শক্তিশালী হবে। ক্যারিংটন ইভেন্ট ছিল এক শক্তিশালী সৌরঝড়, যা পৃথিবীতে আঘাত হেনেছিল এবং তার ফলে সারা বিশ্বের টেলিগ্রাফ সিস্টেম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা এই ঝড়ে এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে, সারা বিশ্বে টেলিগ্রাফের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সৌরঝড়ের ফলে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রেই বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে না, বরং পৃথিবীর বিভিন্ন স্যাটেলাইটও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যার ফলে টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট, এমনকি বিমানের চলাচলেও বিপর্যয় ঘটতে পারে।
যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ম্যাথিউ ওয়েন্স জানিয়েছেন, "এ ধরনের একটি সৌরঝড় পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের জন্য এটি বিস্ময়কর হলেও, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এটি যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়। যদি মিয়াকি ইভেন্টের মতো কিছু ঘটে, তবে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।"
অন্যদিকে, সৌরঝড়ের কারণে যে বিশাল প্রভাব পড়তে পারে, সে সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, "এ ধরনের সৌরঝড় আঘাত হানলে সাধারণ মানুষ ও স্যাটেলাইট সিস্টেমের জন্য ব্যাপক সমস্যা তৈরি হতে পারে। এর প্রভাব শুধু পৃথিবী পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না, মহাকাশেও এর প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।"
বিশ্বব্যাপী এই সৌরঝড়ের প্রভাব কি হবে এবং কীভাবে তা মোকাবিলা করা যাবে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ধরনের সৌরঝড়ের কারণে পৃথিবী থেকে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের যে আধুনিক মাধ্যমগুলো রয়েছে, সেগুলোর কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদী বিপর্যয় ঘটতে পারে।
এটি পৃথিবীর বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং প্রযুক্তিগত স্থিতিশীলতার জন্য এক বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সৌরঝড়ের ফলে যদি একটি বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে, তবে মানবজাতি অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।