বিস্ফোরণের পর বিষাক্ত গ্যাসের আতঙ্ক

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের সাম্প্রতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের সোরোকা হাসপাতাল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেখানে ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী রাসায়নিক পদার্থ। পুলিশ সতর্ক করেছে, ওই এলাকায় কেউ যেন..

ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিরশেবা এখন যেন রণক্ষেত্র! ভয়াবহ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে সেখানকার অন্যতম প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র সোরোকা হাসপাতাল। আর এই ধ্বংসযজ্ঞের মাঝেই নতুন করে দেখা দিয়েছে বিপজ্জনক ও প্রাণঘাতী পদার্থ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা!

শনিবার (স্থানীয় সময় অনুযায়ী) রাতের অন্ধকারে হঠাৎ করেই আকাশজুড়ে গর্জে ওঠে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটি ছিল গত কয়েক দিনের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং ভয়াবহ হামলা। এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে ইরান — যারা বহু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একযোগে ছুড়ে মারে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর দিকে।

সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি লেগেছে সোরোকা হাসপাতালে। আঘাতের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সেখানকার ভয়াবহ কিছু ভিডিও। ভিডিওতে দেখা যায়, ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলি, ভাঙা জানালার কাচ ছিটকে পড়ছে চারদিকে, আর আতঙ্কিত মানুষগুলো চিৎকার করতে করতে দৌঁড়াচ্ছে করিডোর দিয়ে

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাসপাতালটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আঘাতস্থলে বিপজ্জনক কেমিক্যাল পদার্থের লিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত সেটি নিশ্চিত নয়, তবুও যে কোনো দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশ সাধারণ মানুষকে ওই এলাকায় না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

একজন মুখপাত্র সাফ জানিয়ে দেন, “হাসপাতালের আভ্যন্তরীণ কিছু অংশ ধসে গেছে। সেখান থেকে এমন কেমিক্যাল নির্গত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে।”

এ কারণে আশেপাশের এলাকা ঘিরে জরুরি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে এবং উদ্ধারকারী দলগুলো রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

এদিকে শুধুমাত্র বিরশেবা নয়, ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও অন্তত তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও সেগুলোর বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি, তবে জেরুজালেমে অবস্থানরত বিবিসি’র সংবাদদাতা জানিয়েছেন, “বিস্ফোরণের শব্দ এতটাই প্রবল ছিল, মনে হচ্ছিল যেন শহরের ভেতরেই বিস্ফোরণ হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “গত কয়েক দিনে এমন বিকট বিস্ফোরণ আর শোনা যায়নি। আকাশজুড়ে দেখা গেছে আগুনের বল, ঘরবাড়ি কেঁপে উঠেছে।”

এই হামলার পেছনে রাজনৈতিক ও কৌশলগত উদ্দেশ্য রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এবার ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে আবারও পূর্ণমাত্রায় সংঘর্ষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—
“যতক্ষণ না পর্যন্ত উদ্ধার ও পরিস্কারকরণ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে এবং বিষাক্ত উপাদানের বিষয়টি নিশ্চিতভাবে নাকচ করা যাচ্ছে, ততক্ষণ কেউ যেন সোরোকা হাসপাতালের আশেপাশে না যান।”

Không có bình luận nào được tìm thấy