close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

বীর মুক্তিযোদ্ধা স. ম আলাউদ্দীনের ২৯তম শাহাদাত বার্ষিকী: স্মরণে সংগ্রামী জীবন..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার: avatar   
সাতক্ষীরার খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক স. ম আলাউদ্দীনের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ পালিত হচ্ছে..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরার ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক স. ম আলাউদ্দীনের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ পালিত হচ্ছে। ১৯৯৬ সালের ১৯ জুন রাতে দৈনিক পত্রদূত অফিসে কর্মরত অবস্থায় ঘাতকদের গুলিতে তিনি নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ড ঘটে ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:

স. ম আলাউদ্দীনের জন্ম ১৯৪৫ সালের ২৯ আগস্ট সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মিঠাবাড়ি গ্রামে। আজীবন সংগ্রামী ও আপোষহীন এই মানুষটি একাধারে মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন। ১৯৬২ সালে হামাদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র রাজনীতিতে তার প্রবেশ ঘটে। পরবর্তীতে তিনি খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

মুক্তিযুদ্ধের অবদান:

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী স. ম আলাউদ্দীন ছিলেন একজন সাহসী যোদ্ধা। ২৯ মার্চ তিনি ভারতে প্রবেশ করেন এবং বিএসএফ-এর সঙ্গে অস্ত্র সরবরাহের চুক্তি করেন। খুলনা জেলা মুজিব বাহিনীর সংগঠক হিসেবে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের ৮ ও ৯ নম্বর সেক্টরের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

সাংবাদিকতা ও রাজনৈতিক জীবন:

স্বাধীনতার পর তিনি সাতক্ষীরার দৈনিক পত্রদূত এর সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। তবে বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার প্রতিবাদী মনোভাব তাকে রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত করে তোলে। ১৯৭৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর সামরিক সরকারের অধীনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুক্তির পর তিনি জাসদে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন।

সমাজ উন্নয়নে অবদান:

স. ম আলাউদ্দীন সাতক্ষীরার অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠিত করেন এবং ভোমরা স্থলবন্দরের প্রতিষ্ঠাতায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। কর্মমুখী শিক্ষার প্রসারে তিনি 'বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল ও কলেজ' প্রতিষ্ঠা করেন।

মৃত্যু ও উত্তরাধিকার:

১৯৯৬ সালের ১৯ জুন, সাতক্ষীরার পত্রদূত অফিসে কর্মরত অবস্থায় তিনি নিহত হন। তার মৃত্যুতে সাতক্ষীরাসহ সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার বর্ণাঢ্য জীবন ও সংগ্রামী মনোভাব আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

স. ম আলাউদ্দীনের সংগ্রামী জীবন ও অবদান সম্পর্কে স্মরণ করতে গিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা ও স্মরণসভা আয়োজন করা হচ্ছে। তার জীবনাদর্শ নতুন প্রজন্মের জন্য উদাহরণস্বরূপ হয়ে থাকবে।

Walang nakitang komento


News Card Generator