close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ‘বঙ্গলীগ’প্রধান: বিক্ষোভ, অবাঞ্ছিত ঘোষণা; তবু প্রচারণায় অনড়..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
In Jamalpur-2 constituency, Bangaleeg chief Shawkat Hasan Miah remains firm in his BNP nomination campaign despite protests and a “persona non grata” declaration from local party leaders.

জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় এসেছেন বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গলীগের সভাপতি মো. শওকত হাসান মিঞা। আওয়ামী লীগের ছায়াতলে সংগঠন গড়ে তোলার পর বিএনপির মনোনয়ন দাবি করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শওকত হাসান মিঞা একজন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত। ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের বাসিন্দা তিনি ২০১৫ সালে ‘নতুন ধারার রাজনীতি’ স্লোগানে ‘বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গলীগ’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। তবে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দলটি নিবন্ধিত নয়।

বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, বঙ্গলীগ প্রতিষ্ঠার পর সংগঠনটির তেমন কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম দেখা যায়নি, বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন প্রচারে সক্রিয় ছিল। অথচ এখন সেই শওকত হাসান মিঞা বিএনপির মনোনয়নের দাবিদার হয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। এলাকাজুড়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিসংবলিত পোস্টার টানিয়েছেন তিনি।

এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয় বিএনপি। গত ৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে পাথর্শী ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা শওকত হাসান মিঞার বাড়ির সামনে প্রদক্ষিণ করে। পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশে তাঁকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়। সভা শেষে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ইউনিয়ন পরিষদের দেওয়ালে সাঁটানো তাঁর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেন।

ইসলামপুর পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনির খান লোহানী বলেন, “শওকত হাসান মিঞা বঙ্গলীগের প্রধান এবং আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। এখন তিনি বিএনপির মনোনয়ন চাওয়ায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। কোনো অবস্থাতেই তাঁকে বিএনপিতে নেওয়া হবে না।”

একই প্রতিক্রিয়া জানান উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নবাব। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের ছায়াতলে থেকে বঙ্গলীগ গঠন করার পর এখন বিএনপির মনোনয়ন চাওয়া সম্পূর্ণ ভণ্ডামি। আমরা এর কঠোর নিন্দা জানাই।”

তবে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরোধিতা সত্ত্বেও শওকত হাসান মিঞা তাঁর প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় নিজের বাসভবন ‘জামালপুর টুইন টাওয়ারে’ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি, যেখানে ইসলামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোরাদুজ্জামান মোরাদ, সাধারণ সম্পাদক হাফিজ লিটন, সদস্য লিয়াকত হোসাইন লায়ন, দপ্তর সম্পাদক হোসেন রানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে শওকত হাসান মিঞা দাবি করেন, বঙ্গলীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয় বরং এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী উন্নয়ন সংগঠন। তাঁর ভাষায়, “প্রায় দুই দশক ধরে ইসলামপুরের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচনে অংশ নিয়ে এলাকাবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখি। আমি দারিদ্র্যমুক্ত ইসলামপুর গড়ে তুলতে চাই।”

তবে তাঁর এই বক্তব্য স্থানীয় বিএনপির ক্ষোভ প্রশমিত করতে পারেনি। নেতাকর্মীদের দাবি, যারা অতীতে আওয়ামী লীগের কাছাকাছি অবস্থানে ছিল, তাদের বিএনপিতে স্থান দেওয়া মানে দলের আদর্শের অবমাননা।

জামালপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে এই দ্বন্দ্বে এখন উত্তপ্ত রাজনীতি চলছে। স্থানীয় রাজনৈতিক মহল বলছে, শওকত হাসান মিঞা প্রচারণা জারি রাখলেও তাঁর মনোনয়ন পাওয়া এখন বেশ কঠিন।

Комментариев нет


News Card Generator