স্বৈরাচারী কৌশলে বিএনপিকে ধ্বংসের চেষ্টা করেছিলেন শেখ হাসিনা—মিথ্যা মামলা, গুম, হত্যা ছিল তার অস্ত্র। কিন্তু রিজভী বলছেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বেই বিএনপি আবার দাঁড়িয়েছে।
স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়ে জনগণের ভালোবাসা নিয়ে বিএনপি আবারো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে—এমন দাবিই তুলেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার ধামরাইয়ে শরীফবাগ শরীফুন্নেছা মহিলা মাদ্রাসার মাঠে অনুষ্ঠিত এক কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা দিনের পর দিন আমাদের নেতাকর্মীদের জেলে পুরেছেন, মিথ্যা মামলায় হয়রানি করেছেন, গুম-খুন-নির্যাতনের রাজনীতি চালিয়েছেন। উদ্দেশ্য একটাই—বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করা।”
বিএনপির সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও পুরাতন সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উপলক্ষে আয়োজিত এই সমাবেশটি ছিল একইসঙ্গে প্রতিবাদী। রিজভী বলেন, “আপনারা দেখেছেন, আমাদের ছাত্রছাত্রীদের উপর নির্বাচনের সময় কীভাবে গুলি চালানো হয়েছে। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আবু সাঈদকে কী নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। আর মুগ্ধ! সে শুধু পানি চেয়েছিল, তাকেও গুলি করা হলো। এগুলো ক্ষমতার নেশায় পাগল এক স্বৈরাচারের চেহারা।”
তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “আমরা ভুলিনি। আমরা ক্ষমা করিনি। কিন্তু আমরা প্রতিশোধের রাজনীতি করি না। আমরা জনগণের রাজনীতি করি।”
রিজভী তার বক্তব্যে দাবি করেন, গত ১৬ বছরে যে গণতন্ত্রকে বারবার রুদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে, তার পেছনে ছিল একচ্ছত্র ক্ষমতার লোভ। “খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বেই সেই গণতন্ত্রের মাটিতে আবারো আন্দোলনের ফুল ফুটেছে, আর জুলাই আন্দোলন এরই বিজয় পতাকা।”
তিনি বলেন, “আপনারা যখন কুৎসা ও অপপ্রচারে ব্যস্ত ছিলেন, আমরা তখন শহীদ ও আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি।”
রিজভী কড়া বার্তায় বলেন, “দলের অভ্যন্তরে কেউ যদি সহিংসতা করে, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। বিএনপি কোনো সন্ত্রাসী দল নয়। দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি অপরাধ করে, সেই খবর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
তিনি বলেন, “আমরা সেই রাজনীতি করি না, যেখানে হিংসা দিয়ে ক্ষমতা দখল হয়। আমরা বিশ্বাস করি জনতার ম্যান্ডেটে। যারা আমাদের বদনাম করেছে, তারা এখন জনতার রোষানলে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব তমিজ উদ্দিন। প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সুলতানা আহমেদ, সদস্য নবায়ন কমিটির নেতা গোলাম মাওলা শাহীন এবং ধামরাই বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শামছুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
সমাবেশস্থলে ‘জুলুমবাজ হটাও, গণতন্ত্র বাঁচাও’, ‘তারেক ভাই এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’সহ নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে মাদ্রাসা মাঠ। নতুন ও পুরাতন নেতাকর্মীরা প্রতিজ্ঞা করেন, দমন-পীড়ন নয়, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই বিএনপি এগিয়ে যাবে।