বিএনপি বাস-লঞ্চঘাট দখল করছে, আর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে জামায়াত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Former Home Minister Altaf Hossain Chowdhury admitted that BNP is occupying bus and launch terminals while Jamaat controls universities. His viral statement has sparked heated debate within the party.

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর বক্তব্যে বিস্ফোরণ— তিনি স্বীকার করেছেন, বিএনপি দেশের পরিবহন ঘাট দখল করছে আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে জামায়াত। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর দলে শুরু হয়েছে তোলপাড়।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরীর এক বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তিনি প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি পরিবহন খাত দখল করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে জামায়াত।

গত ১৪ আগস্ট পটুয়াখালী শহরের শের ই বাংলা সড়কের সারাইয়া ভবনে জেলা কৃষকদলের এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ বক্তব্য দেন। সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, “আমাদের পটুয়াখালীর চিত্র দেখেন। আমরা বাসস্ট্যান্ড দখল করছি, লঞ্চঘাট দখল করছি, ফেরিঘাট দখল করছি। আর জামায়াত ভার্সিটি দখল করছে। এখন পার্থক্য বুঝছেন? নেতা হলেই হবে না, নেতার কোয়ালিটি থাকতে হবে। যদি মনে করেন চাঁদাবাজি আর দখলবাজিই নেতৃত্বের কাজ, তাহলে নেতৃত্ব দেবেন কবে?”

তার এই মন্তব্যের ভিডিওটি গত ১৭ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি ঘিরে বিএনপির ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া— কেউ এটিকে দলের অবস্থান স্পষ্ট করার সাহসী বক্তব্য হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ এটিকে আত্মঘাতী স্বীকারোক্তি বলে সমালোচনা করছেন।

সভায় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ইভান শিকদার, সভাপতি প্রার্থী জাকির হাওলাদার, জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল-আমীন সুজন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল হেলাল নয়নসহ কৃষকদল ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বিএনপি ও জামায়াতের কর্মকাণ্ডের মধ্যে তুলনা টেনে আনেন।

তিনি বলেন, “দেশের অধিকাংশ ইউনিভার্সিটিতে এখন ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে জামায়াতের লোক বসানো হয়েছে। আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট থেকে শুরু করে হাইকোর্টের বিচারপতিদের মধ্যেও জামায়াতের প্রভাব রয়েছে। আমরা তাদের বদনাম করছি না, কেবল পার্থক্যটা বোঝাতে চাইছি।”

ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পটুয়াখালী বিএনপির ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান টোটনকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ঢাকায় ছিলাম, এখন পটুয়াখালীর পথে। তবে এমন কোনো বক্তব্য আমার চোখে পড়েনি। ভিডিও দেখে বোঝা যাবে— কেন তিনি এ ধরনের মন্তব্য করেছেন।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার মুখে এই ধরনের বক্তব্য দলটির ভাবমূর্তিকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে। বিশেষ করে যখন রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে চাইছে, তখন ভেতর থেকে এমন প্রকাশ্য স্বীকারোক্তি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।

অন্যদিকে, জামায়াতের প্রভাব নিয়ে তার মন্তব্যও নতুন প্রশ্ন তুলেছে। অনেকেই বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি ও জামায়াতের রাজনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও প্রকাশ্যে এভাবে প্রভাব বিস্তারের স্বীকারোক্তি রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

এখন দেখার বিষয়— এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিএনপির ভেতরে কী ধরনের অবস্থান নেওয়া হয় এবং দলীয় পর্যায়ে এর কী প্রভাব পড়ে। তবে ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

No se encontraron comentarios