close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বিদেশে রোজগারের স্বপ্নে ছুটে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরছেন সাইফুল! সৌদিতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল যুবকের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সৌদিতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল মৌলভীবাজারের সাইফুলের। পরিবারের হাল ধরতে পাড়ি দিয়েছিলেন বিদেশে, ফিরছেন কফিনবন্দি হয়ে। আরেক বাংলাদেশি গুরুতর আহত।..

সৌদির রিয়াদে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল বাংলাদেশি যুবক সাইফুল ইসলামের

রিয়াদ (সৌদি আরব) থেকে বিশেষ প্রতিনিধি:
বিদেশে কর্মসংস্থান আর পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন নিয়ে ২০২১ সালে সৌদি আরব পাড়ি দিয়েছিলেন সাইফুল ইসলাম (২৬)। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস—সেই স্বপ্নের দেশে তাঁর জীবনের যবনিকা টানল এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে গাড়ি উল্টে ঘটনাস্থলেই নিহত হন এই যুবক।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার, ২০ মে বিকেলবেলা। সাইফুল ইসলাম ছিলেন মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের পূর্ব বেলাগাঁও (কন্টিনালা) গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় মো. শারজান মিয়ার বড় ছেলে। একই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আকমল হোসেন (২৫)। তাঁকে রিয়াদের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পরিবারে শোকের মাতম

সাইফুল ইসলামের প্রতিবেশী আরিফুল ইসলাম জানান, “অল্প বয়সেই পরিবারকে টানতে বিদেশে যায় সাইফুল। ওর স্বপ্ন ছিল মায়ের জন্য পাকা ঘর বানাবে, ছোট ভাইদের পড়াশোনার খরচ চালাবে। কিন্তু আজ সব স্বপ্ন থেমে গেছে। গ্রামের সবাই এখন শোকস্তব্ধ।”

নিহতের পরিবার থেকে জানানো হয়, সাইফুল তানমিয়া ফুড গ্রুপে ইলেকট্রিশিয়ান পদে কর্মরত ছিলেন। কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতি ও ক্লান্তি দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

মরদেহ হিমঘরে, প্রবাসীদের উদ্বেগ

নিহতের মরদেহ বর্তমানে রিয়াদের একটি সরকারি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। সৌদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মরদেহ দ্রুত বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, "আমরা মরদেহ দ্রুত পাঠানোর জন্য দূতাবাসের মাধ্যমে কাজ করছি।"

প্রবাসীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার ফোরাম, রিয়াদ’ এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং প্রবাসীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

দুর্ঘটনায় নিরাপত্তাহীন প্রবাস জীবন

এই দুর্ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো, মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত লাখো বাংলাদেশি প্রবাসী কতটা ঝুঁকি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন পার করছেন। সড়কে প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছেন প্রবাসীরা। অথচ এসব মৃত্যু দেশে ফিরে কেবল একটি সংবাদ হয়ে যায়। কেউ খোঁজ নেয় না—কীভাবে চলবে সেই পরিবারের দিন?

সাইফুলের পরিবার এখন চোখে জল নিয়ে অপেক্ষা করছে প্রিয় সন্তানের মরদেহ ফেরার। কিন্তু তাদের এই অপেক্ষা কখনও পূরণের মতো নয়, কারণ সাইফুল আর কোনোদিন ফিরবেন না জীবিত।


শেষ কথা:
বিদেশে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো সাইফুল ইসলামের মৃত্যু আবারও আমাদের সামনে স্পষ্ট করে তুলছে প্রবাসী জীবনের ঝুঁকিপূর্ণ বাস্তবতা। যারা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আরও সচেতন হওয়া সময়ের দাবি।

कोई टिप्पणी नहीं मिली