close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

বিচারক শূন্য ফটিকছড়ি আদালত, বিচার ব্যবস্থায় স্থবিরতা

আসগর সালেহী avatar   
আসগর সালেহী
সেবা বঞ্চিত ৩০ হাজার মানুষ

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে গত প্রায় তিন মাস ধরে কোনো বিচারক নেই। এতে মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বিচারপ্রার্থীদের অভিযোগ—বিচারক শূন্য এই আদালতে শুধু তারিখ পড়ছে, বিচার কাজ হচ্ছে না। ফলে মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। দ্রুত নতুন বিচারক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন তারা।

 

জানা গেছে, ফটিকছড়ি সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বর্তমানে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মামলা চলমান। এসব মামলার বাদী-বিবাদী, স্বাক্ষী, আসামি ও আইনজীবী মিলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ আদালতের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। বিচারক না থাকায় প্রতিটি মামলায় শুধু তারিখ ধার্য করা হচ্ছে, কোনো কার্যক্রম এগোচ্ছে না। এতে মামলার নিষ্পত্তি হার কমে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি।

 

চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ফটিকছড়ি আদালতের বিচারক মো. মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়াকে বদলি করা হয়। এরপর থেকে পদটি শূন্য রয়েছে। এ অবস্থায় বিচারপ্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তারা বছরের পর বছর ধরে মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন আদালতে বিচারক না থাকায় শুধু তারিখ নিতে এসে তাদের সময় ও অর্থের অপচয় হচ্ছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মামলার কয়েকজন আসামি জানান, ‘গত দুই মাস ধরে আদালতে বিচারক নেই। এতে আমাদের মামলার তারিখ পড়লেও কোনো শুনানি হয় না। এতে মামলা ঝুলে থাকছে। আমরা দ্রুত নতুন বিচারক দেওয়ার দাবি জানাই।’

 

ফটিকছড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারপ্রার্থীরা অনেক আশা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। কিন্তু বিচারক না থাকলে আমরা কীভাবে তাদের পক্ষে আইনি লড়াই চালাবো? বিচারক শূন্যতার সুযোগে এলাকায় জমি-জমা দখল, সন্ত্রাসী কার্যকলাপও বেড়ে যাচ্ছে।’

 

বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী চৌধুরী বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলের এই ঐতিহ্যবাহী চৌকি আদালতে দীর্ঘ তিন মাস বিচারক নেই—বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। বর্তমানে সাড়ে পাঁচ হাজার মামলায় অন্তত ২৫-৩০ হাজার মানুষ বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছেন। আমরা বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।’

 

বিচারক না থাকায় আদালতের কার্যক্রম পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে জমি-জমা বিরোধ, পারিবারিক কলহ, দেনা-পাওনাসহ নানা মামলায় বিপাকে পড়েছেন বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ। আদালত চালু না থাকায় জরুরি মামলাগুলোরও শুনানি হচ্ছে না। ফলে একটি আদালত বন্ধ থাকলে জনজীবনে কী ভয়াবহ ভোগান্তি দেখা দেয়—ফটিকছড়ি আদালত এখন তার বড় উদাহরণ।

 

আসগর সালেহী

চট্টগ্রাম।

#০১৮৭১৮৩৯৩৫৩

Nessun commento trovato