close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়ে সরকারের আপত্তি নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল..

সুভাষ মজুমদার avatar   
সুভাষ মজুমদার
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শক্তিশালী বিচার বিভাগ চায়। বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠায় সরকারের কোনো আপত্তি নেই। আমরা বিচ..

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানির প্রথম দিনে রাষ্ট্র ও রিটপক্ষের মধ্যে টানটান যুক্তি-পাল্টা যুক্তি উপস্থাপিত হয়। বুধবার (১৬ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

রাষ্ট্রের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ ব্যবস্থার গুরুত্ব রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, প্রয়াত ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ “পাওয়ারের ব্যালেন্স” প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলায় যে যুক্তি তুলে ধরেছিলেন, তা পরবর্তী শুনানিতে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে।

তবে শুনানির একপর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার বিচার বিভাগকে অপকর্মের লাইসেন্স দিয়েছিল।” তিনি দাবি করেন, বিচার বহির্ভূতভাবে সাড়ে চার হাজার মানুষকে হত্যা এবং ৭০০ জনকে গুম করা হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “এমন বিচার বিভাগ আমরা চাই না।”

এ সময় আদালত প্রশ্ন রাখেন, “আপনারা কি বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় চাচ্ছেন?” উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দেন এবং বলেন, “আমরা চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের বিষয়টি হাইলাইট করতে চাই।”

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করতে গিয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, বর্তমান ১১৬ অনুচ্ছেদের কারণে বিচারকদের ভয় দেখিয়ে কাজ করানো হয়, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিচারকদের অনিচ্ছার মুখোমুখি হলে তাদের দূরবর্তী অঞ্চলে, যেমন বান্দরবানে বদলি করা হয়।

শুনানির শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল অসমাপ্ত বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য সময় চাইলে আদালত ৪ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। বিচারকগণ মন্তব্য করেন, “আমরা আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই এ শুনানি শেষ করতে চাই।”

উল্লেখ্য, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বর্তমানে বলা হয়েছে, অধস্তন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে। তবে ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে এসব ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত ছিল। ১৯৭৪ সালে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়া হয় এবং ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বর্তমান রূপে তা পুনর্বহাল করা হয়।

এই পরিবর্তনের ফলে নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণে অনধিকার হস্তক্ষেপ করছে কি না, তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উসকে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুনানির রায় বিচার বিভাগের ভবিষ্যৎ কাঠামোর ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

לא נמצאו הערות