close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

বি এ ন পি র সম্মেলনে আ. লী গ নেতার পক্ষে ম হ ড়া ও স্লো গান

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সালথায় বিএনপির সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে শোডাউন, স্লোগান আর ব্যানার—সবই ভাইরাল! কারাবন্দি নেতাকে উপস্থাপন করা হলো বিএনপির নির্যাতিত কর্মী হিসেবে।..

রাজনৈতিক অঙ্গনে বিস্ময় ছড়িয়েছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায়। সেখানে বিএনপির একটি কর্মী সম্মেলনে অংশ নেয় একদল স্লোগানধারী সমর্থক, যারা শোডাউন দেয় একজন আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে—যিনি বর্তমানে কারাগারে বন্দি এবং দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে আছেন! তার ভাই নেতৃত্ব দেন এই শোডাউনে, যিনি আবার উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

এই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও রহস্যময় আলোচনা। ঘটনা ঘটে ২২ জুন, রোববার দুপুরে সালথা উপজেলার উপজেলা পরিষদের মাল্টিপারপারাস মিলনায়তনে বিএনপির আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলনের দিন। অথচ সেখানে আওয়ামী লীগ নেতাকে উপস্থাপন করা হয় বিএনপির বার বার ‘নির্যাতিত’ নেতা হিসেবে।

২৩ জুন রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যায়—কারারুদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা নুরুদ্দীন মাতুব্বরের ছবি, ব্যানার আর স্লোগান নিয়ে একটি মোটর শোভাযাত্রা সালথা উপজেলা ঘুরে পৌঁছে বিএনপির সম্মেলনস্থলে।

এই শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন তার ভাই মুনছুর মাতুব্বর, যিনি স্বয়ং উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ব্যানারে ছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি, সাথে নুরুদ্দীনের বিশাল ছবি এবং বার্তা—"বার বার নির্যাতিত বিএনপি নেতা মো. নুরুদ্দীন মাতুব্বরের পক্ষ থেকে শামা আপার হাতকে শক্তিশালী করতে ২২ জুন সালথা উপজেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলন সফল হোক।"

এখানেই মূল প্রশ্ন—আসলে নুরুদ্দীন কোন দলের? তার ভাই মুনছুর দাবি করছেন, “আমার ভাই আজীবন বিএনপি করেছেন। আওয়ামী লীগে কোনো পদে নেই।” অথচ সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী সাব্বির আলী ও সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান স্পষ্ট জানাচ্ছেন, “নুরুদ্দীন মাতুব্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক।”

এমনকি ওসি আতাউর রহমান জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে রয়েছে তিনটি মামলা—থানায় হামলা, অস্ত্র লুট ও বিস্ফোরক আইনে মামলা, যেগুলোর কারণে তাকে গত ২৯ মার্চ গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। এখন তিনি ফরিদপুর জেলা কারাগারে আছেন।

এ ঘটনার পরেই সালথা উপজেলা বিএনপির ভেতরে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে দলের তিনজন নেতা বলেন, এই ‘শোডাউনের’ পেছনে মূল মদদ দিয়েছেন নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি এবং বর্তমান লস্কারদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বাবুল তালুকদার। যদিও বাবুল এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করে বলেন, “এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। এটা আমার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অংশ।”

বিএনপির সালথা উপজেলার সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার জানিয়েছেন, “দলের এক বহিষ্কৃত নেতার সহায়তায় এই ঘটনা ঘটেছে। তবে সম্মেলনের দিন জেলা নেতারা আসায় আমরা তখন বাধা দেইনি।”

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া বলেন, “আওয়ামী লীগের কোনো নেতার বিএনপিতে আসার সুযোগ নেই। এমন কিছু হলে আমরা তা প্রতিহত করবো।

একজন সরকারি দলে থাকা নেতার নামে এমন শোডাউন বিরোধী দলের সম্মেলনে—এই ঘটনা শুধু বিস্ময়ই নয়, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চোখে এক গভীর ধাঁধার জন্ম দিয়েছে।
এটি কি ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, নাকি দলের ভেতর ছদ্মবেশী অনুপ্রবেশ?
নাকি এটি স্রেফ স্থানীয় রাজনীতির রং বদলের কৌশল?

রাজনীতির মাঠে এই ভিডিও যেন আরও একটি ‘গোপন আঁধার’ উন্মোচন করল, যার শেষ কোথায়—তা এখনো স্পষ্ট নয়।

Ingen kommentarer fundet