পাকিস্তানের করাচির মালির জেল থেকে ভয়াবহ নিরাপত্তা ভেদ করে পালিয়ে গেছে ২১৬ জন কয়েদি। সোমবার (২ জুন) ভূমিকম্পের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণে বন্দিদের অস্থায়ীভাবে ব্যারাকের বাইরে আনার পর এই পালানোর ঘটনা ঘটে। বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়েই এই জেল ভাঙার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
জেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ভূমিকম্পে বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় সার্কেল ৪ ও ৫-এর প্রায় ৬০০ কয়েদিকে বাইরে সরিয়ে আনা হয়। তখনই তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। গেটের সামনে ৭০০ থেকে ১,০০০ কয়েদি জমায়েত হলে একটি বড় দল ফটক ভেঙে পালিয়ে যায়।
এ পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি পলাতক বন্দিকে পুনরায় আটক করা হয়েছে। তবে এখনও ১৩৫ জনের বেশি বন্দি পলাতক রয়েছে। পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে অনেকেই মাদক সংশ্লিষ্ট ও মানসিকভাবে অস্থির বলে জানানো হয়েছে, যাদের শনাক্ত ও ধরতে অভিযান চলছে।
সিন্ধ প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়া-উল-হাসান লাঞ্জার এই ঘটনাকে “সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জেল ভাঙার ঘটনা” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় কারা দায়িত্বে অবহেলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সিন্ধ পুলিশের মহাপরিদর্শক গুলাম নবি মেমন জানান, পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। যদিও এই ঘটনার পেছনে কোনো পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত পাওয়া যায়নি, তবে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত চলবে বলে জানান তিনি।
এই ঘটনার সময় তিনজন ফ্রন্টিয়ার কর্পস সদস্য, একজন জেল স্টাফ আহত হন এবং একজন বন্দির মৃত্যু হয়।
পুনরায় আটক হওয়া বন্দি সিরাজ বলেন, “ভূমিকম্পের সময় সবাই ভয়ে দৌড়াদৌড়ি করছিল, গেট ভাঙতে শুরু করে। আমিও পালিয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু ধরা পড়ে গেছি।”
ঘটনার সময় মালির জেলে মোট ৬,০২২ জন কয়েদি ছিল। পলাতক বন্দিদের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনা ঘিরে পাকিস্তানজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং কারাগার ব্যবস্থাপনায় গাফিলতি নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনা শুরু হয়েছে। যৌথভাবে পুলিশ, রেঞ্জার্স, ফ্রন্টিয়ার কর্পস, এসএসইউ এবং র্যাপিড রেসপন্স ফোর্স উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।