close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ভোটের কোনও বিকল্প নেই: তারেক রহমান

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Tarique Rahman warned that only people’s direct votes can stop fascism, not constitutional rules. He urged vigilance, saying democracy will face crisis if the electoral process is obstructed.

তারেক রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদ ঠেকাতে সংবিধান নয়, জনগণের ভোটই একমাত্র শক্তি। তিনি সতর্ক করেছেন, নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি হলে গণতন্ত্র মারাত্মক সংকটে পড়বে।

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী অবস্থান তুলে ধরে বলেছেন—“সংবিধান কিংবা লিখিত বিধান দিয়ে কখনোই ফ্যাসিবাদ ঠেকানো সম্ভব নয়। রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ করতে হলে জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। আর সেই শক্তির মূল উৎস হলো জনগণের সরাসরি ভোট।”

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিনি এসব কথা বলেন। বিকাল সাড়ে ৪টায় শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা, জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

তারেক রহমান বলেন, “সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে তারা প্রকৃত শক্তি অর্জন করে। জনগণ শক্তিশালী না হলে রাষ্ট্র ও সরকার কখনোই শক্তিশালী হতে পারে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রধান মাধ্যমই হলো নির্বাচন।”

নির্বাচন নিয়ে সতর্কতা

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি একটি বিষয় স্পষ্ট করে বলতে চাই— নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানকে ঘিরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আমাদের সহকর্মী বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের মন্তব্য গণতন্ত্রকামী জনগণের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আমি আহ্বান জানাই, সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল যেন বিভাজিত না হয়। কারণ দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হলে ফ্যাসিস্ট শক্তির পুনর্বাসন সহজ হয়ে যাবে। তাই আমি গণতন্ত্রকামী জনগণকে সতর্ক ও সজাগ থাকার অনুরোধ করছি।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে নানা ধরনের শর্ত বা বাধা তৈরি হলে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা গভীর সংকটে পড়বে। স্বৈরাচারী শাসনের সময় যেমন কেউ নিরাপদ ছিল না, আবারো সেই পরিস্থিতি ফিরে আসতে পারে। যদি জনগণ নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করতে না পারে, তবে রাষ্ট্র ও সমাজ সমগ্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

জনগণের সমর্থনের আহ্বান

তারেক রহমান জানান, বিএনপি বিশ্বাস করে জনগণই সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা জনগণের সামনে যান, বলুন—ভোট দিলে ধানের শীষে আমরা দেশকে গড়ে তুলব। আসন্ন নির্বাচনে জনগণের সমর্থন পেলে দেশের উন্নয়নে বিএনপির পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।”

স্বেচ্ছাসেবক দলের চলমান কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আপনারা যে হাসপাতাল ও পরিবেশ রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমের উদ্যোগ নিয়েছেন, সেটিকে আরও প্রসারিত করুন। সারা দেশে ইউনিয়নভিত্তিক পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি হাতে নিলে তা জনগণের কাছে বিএনপিকে নতুনভাবে উপস্থাপন করবে। এভাবে রাজনৈতিক চর্চায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।”

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা বক্তব্য রাখেন।

শহীদ পরিবারের সদস্যরাও অনুষ্ঠানে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। শহীদ শওকত আলীর সহধর্মিণী রাবেয়া আক্তার, শহীদ সাইদুর রহমানের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার, শহীদ নজরুল ইসলামের ছেলে রিয়াজ আহমেদ রাজু এবং গুম হওয়া কাউসার হোসেনের মেয়ে লামিয়া আক্তার মীম আবেগঘন বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, রুহুল কবির রিজভী, তানভীর আহমেদ রবীন, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, জাসাসের হেলাল খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তারেক রহমানের বক্তব্যের সারমর্ম হলো— জনগণের শক্তিকে উপেক্ষা করে কোনোভাবেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের আহ্বান জানান এবং সব কর্মকাণ্ডে জনগণের আস্থা অর্জনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন।

Inga kommentarer hittades