close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ভোগান্তির মধ্যেই ছুটি শেষে রাজধানীমুখী জনস্রোত: ভাড়া পাঁচ গুণ, পথের শেষ কোথায়?..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঈদের ছুটি শেষে অফিসপাড়ার ব্যস্ততা শুরুর আগেই রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। লঞ্চ, ট্রেন ও সড়কে যাত্রীদের চাপ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। পরিবহন সংকট, অতিরিক্ত ভাড়া এবং তীব্র গরম মিলিয়ে সাধারণ মানুষ পড়েছে দুর্ভোগে।..

ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার হিড়িক: ভাড়া পাঁচগুণ, নেই স্বস্তি

ঈদুল আজহার আনন্দ পেছনে ফেলে আবার কর্মব্যস্ত জীবনে ফেরার পালা। দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকামুখী মানুষের স্রোত যেন থামছেই না। শনিবার (১৪ জুন) ছিল ঈদের ছুটির শেষ দিন, আর আগামীকাল রোববার থেকেই খুলছে অফিস-আদালত। এই বাস্তবতায় সকাল থেকেই রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোয় শুরু হয় মানুষের ঢল।

সদরঘাটে মানুষের স্রোত, লঞ্চভর্তি যাত্রী

রাজধানীর সদরঘাটে সকাল থেকেই যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে। দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ভিড়তে থাকে লঞ্চগুলো। প্রতিটি লঞ্চেই ধারণক্ষমতার বাইরে যাত্রী তোলা হয়েছে। যাত্রীরা জানান, ঈদ শেষে একসঙ্গে এত মানুষ ফেরায় কোনোভাবেই চাপ সামলানো যাচ্ছে না।
যাত্রীরা বলছেন, ‘ভাড়া আগের মতোই, তবে বসার জায়গা নেই। অনেকে দাঁড়িয়ে বা ছাদে চড়ে এসেছে।’ যদিও ভাড়া নিয়ে সরাসরি অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তবে যাত্রীদের ভিড় ও ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ কম ছিল না।

কমলাপুর রেলস্টেশনে লাইনেই ঈদ শেষ

কমলাপুর রেলস্টেশনও ভিন্ন দৃশ্যের সাক্ষী হয়নি। ভোর থেকে রাত অবধি বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ট্রেনে ছিল প্রচণ্ড যাত্রীচাপ। কেউ পরিবারসহ ফিরছেন, কেউ একা। স্টেশনের বাইরে জটলা, লাইনে দাঁড়িয়ে শিশু-কিশোরদের ক্লান্ত মুখ যেন জানিয়ে দিচ্ছে ফেরার কষ্ট কতটা গভীর।
অনেকে বলেন, ‘সিট না পেলেও ট্রেনে উঠতেই হয়েছে। এখন ঢাকায় ফিরতে না পারলে কাল অফিসে অনুপস্থিত হতে হবে।’

গণপরিবহনে ভাড়া পাঁচ গুণ, অনেকে হেঁটেই রওনা

সবচেয়ে বড় সংকট দেখা গেছে রাস্তায়। ঢাকার সড়কগুলোয় গণপরিবহনের ঘাটতি ছিল মারাত্মক। অতিরিক্ত যাত্রীর ভিড় সামাল দিতে না পেরে অনেক পরিবহন সীমিত সংখ্যায় চলেছে। আর এই সুযোগে হেলপার ও চালকরা আদায় করেছেন চড়া ভাড়া। যাত্রীদের অভিযোগ, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৪-৫ গুণ বেশি ভাড়া দিতে হয়েছে।
অনেকে বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটেই রওনা হয়েছেন গন্তব্যের দিকে। মধ্যবয়সী যাত্রী রফিকুল ইসলাম জানান, ‘জিনিসপত্র নিয়ে একটা বাসে উঠতে পারিনি। ভাড়াও বেশি, তাই হেঁটেই চলছি।’

একটা শহর, লাখো মুখ, একটাই গন্তব্য—ফেরার তাড়না

ঢাকা যেন এক অলিখিত যুদ্ধক্ষেত্রের মতো রূপ নিয়েছে। সবাই শুধু ফিরতে চায়—চায় আবার চাকরি, অফিস, ব্যবসা বা স্কুলে ফিরতে। কিন্তু পথ সহজ নয়। রোদের তাপে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেকেই। ট্রেন ও লঞ্চ থেকে নামার পর যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়।

পরিবহন ব্যবস্থা কতটা প্রস্তুত?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে প্রতি ঈদের পর ঢাকায় মানুষের ফেরার স্রোত সামাল দিতে আলাদা পরিকল্পনা দরকার। অতিরিক্ত ট্রেন বা লঞ্চ চালু করা হলেও সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণে নেই। সময়োপযোগী ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।

শেষ কথায়...

ঈদ শেষে রাজধানীতে ফেরা মানুষের গল্প কেবল আনন্দ আর শুভ কামনার নয়, বরং ক্লান্তি, ভোগান্তি আর বাস্তবতার সঙ্গে টিকে থাকার এক যুদ্ধ। সরকারি উদ্যোগ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ছাড়া ভবিষ্যতের পথেও একই ভোগান্তি অপেক্ষা করছে—যা চাইলেও কেউ উপেক্ষা করতে পারবে না।

No comments found