ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপের ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেলো

সম্প্রতি ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত কয়েকজন ব্যক্তির বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনো তাদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দেয়। ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান "রিউমার স্ক্যান" জানায়, ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপের ঘটনাটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভ্যানে কয়েকটি মরদেহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে এবং আরেকটি মরদেহ ভ্যানে তুলে দিচ্ছে পুলিশ। পরে একটি পোস্টার দিয়ে মরদেহগুলো ঢেকে ফেলা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে আরও কয়েকজন পুলিশকে হাঁটাহাঁটি করতেও দেখা যায়। রিউমার স্ক্যান আরও জানায়, ভিডিওতে দেখা দেওয়ালে যার পোস্টার রয়েছে, তিনি আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী আবুল হোসেন ভূঁইয়া। জানা গেছে, ভিডিও প্রকাশের পরপরই দেওয়ালের সব পোস্টার মুছে ফেলে নতুন করে রং করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাই থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। এই প্রেক্ষাপটে, গত ১৫ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ এবং পুলিশও আন্দোলন দমাতে গুলি চালায়। পরবর্তীতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে গত ৪ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে কয়েক শতাধিক নিহতের খবর পাওয়া যায়। এরপর ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এ অবস্থায়, আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও দেশত্যাগ করতে শুরু করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি বাড়ায় এবং অপরাধীদের দেশ থেকে পালানো ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নেয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যা, নির্যাতন, অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় মামলা দায়ের হতে থাকে। এসব মামলায় আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীসহ প্রশাসনের অনেককেই আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে, কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী ও এমপিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এই ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।