close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ভিক্ষুকের ঘরে ২ বস্তা টাকা, গুনতে লাগল ৫ ঘণ্টা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Locals in Sirajganj were shocked after finding two sacks of money inside beggar Saleha Pagli’s house. It took nearly five hours to count over Tk 1.26 lakh, sparking viral discussions across social med..

সিরাজগঞ্জের মাছুমপুর মহল্লায় ঘটে গেছে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। সালেহা পাগলি নামে এক নারী ভিক্ষুকের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে টাকাভর্তি দুটি বস্তা। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে টাকার হিসাব মেলানোর কাজ। স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই টাকাগুলো সালেহার মেয়ের জিম্মায় তুলে দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সালেহা বেগম, যিনি এলাকায় ‘সালেহা পাগলি’ নামে পরিচিত, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার মাছুমপুর মহল্লায় রায়পুর ১ নম্বর মিলগেট এলাকার একটি পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের বারান্দায় একাই বসবাস করতেন। জীবনভর ভিক্ষা করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। তাঁর অদ্ভুত আচরণের কারণে অনেকে তাঁকে ‘পাগলি’ বললেও তিনি ছিলেন পরিশ্রমী এবং নিজের উপার্জনের প্রতি সচেতন।

ঘটনাটি প্রকাশ পায় বৃহস্পতিবার সকালে। স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. হাসু জানান, “আমি ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি অনেক মানুষ জড়ো হয়েছে। সালেহা সেখানে ছিলেন না। ঘরের ভেতরে একটি বড় ও একটি ছোট বস্তা পাওয়া যায়। খুলে দেখি ভিতরে কাপড়ে মোড়ানো খুচরা টাকা-পয়সা। সবাই বলে, এগুলো সালেহা বেগমের সঞ্চিত টাকা।

পরবর্তীতে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে বস্তা দুটি উদ্ধার করে স্থানীয় মাতব্বরদের তত্ত্বাবধানে গণনা শুরু হয়। ছয় থেকে সাতজন মিলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে টাকার হিসাব করেন। নোটগুলোর মধ্যে এক, দুই, পাঁচ, দশ, বিশ, পঞ্চাশ, একশ, দুইশ ও পাঁচশ টাকার নোট পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে পাওয়া যায় এক লাখ ছাব্বিশ হাজার দুইশ তিপ্পান্ন টাকা।

টাকা গোনার সময় অনেক নোট ছেঁড়া ও নষ্ট অবস্থায় ছিল। স্থানীয় যুবদল নেতা রাসেল শেখ বলেন, “টাকাগুলো এমনভাবে বস্তায় করে রেখেছিল যে ময়লা আর দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। আমরা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে হিসাব করেছি।

স্থানীয় সিদ্দিক হোসেন জানান, সালেহার মা-বাবা দুজনই ভিক্ষা করতেন। সালেহা ছোটবেলা থেকেই একই পথে জীবন কাটিয়েছেন। প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি ভিক্ষা করছেন। “তবে এত টাকা তাঁর কাছে আছে, এটা আমরা কেউ ভাবিনি,” বলেন তিনি।

সালেহার মেয়ে স্বপ্না খাতুন জানান, “আমার মা একটু পাগলাটে ধরনের। কারও কথা শুনতেন না। নিজের মতো করে টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন। কখনও আমাদের বলেননি কত টাকা আছে। সারাদিন বাইরে ভিক্ষা করে রাতে মিলগেটের বারান্দায় ঘুমাতেন।

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করে। সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পতিন কুমার বণিক বলেন, “আমরা গিয়ে দেখি স্থানীয়রা টাকা গুনছে। শেষে মোট এক লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ টাকা পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৯৫ হাজার নোট ও বাকিটা কয়েন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে টাকাগুলো সালেহার মেয়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

পুরো ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। অনেকেই মন্তব্য করেন, “যে নারী সারাজীবন ভিক্ষা করে টাকাগুলো জমিয়েছে, তাঁর মিতব্যয়িতা এবং সততার গল্প সবার জন্য শিক্ষা।

সালেহা পাগলির দুই বস্তা টাকা যেন সমাজের কাছে এক প্রশ্ন ছুড়ে দিল—ভিক্ষুক বলে কেউ গরিব নয়, অনেক সময় গরিবের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে অদম্য অধ্যবসায় ও সঞ্চয়ের গল্প।

לא נמצאו הערות


News Card Generator