শনিবার (৩১ মে) কোয়েটার কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, “আমাদের শত্রু — যাদের বিরুদ্ধে জয় অনেকের চোখে ছিল কল্পনার বাইরে — তাদের আমরা পরাজিত করেছি। এটি আমাদের ইতিহাসের গৌরবময় মুহূর্ত।”
তিনি বলেন, পাকিস্তান এখন এমন এক উচ্চতায় রয়েছে যেখানে সামরিক ও অর্থনৈতিক উভয় শক্তিতে দেশের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। সেনাবাহিনী ও সরকার যৌথভাবে দেশকে নতুন সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস” ভারতকে ‘বিস্মিত’ করেছে
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, “পাকিস্তানি বাহিনীর পাল্টা অভিযানে ভারত বিস্মিত ও স্তম্ভিত হয়েছে। ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’ শত্রুর প্রতিরক্ষা ভেঙে দিয়েছে এবং তাদের তথাকথিত সামরিক শ্রেষ্ঠত্বের মিথ ধ্বংস করেছে।”
তিনি জানান, পাকিস্তান কেবল জবাব দেয়নি, বরং পাল্টা কৌশল প্রয়োগ করে ভারতকে একটি “নতুন বাস্তবতা”র মুখোমুখি করেছে।
হামলা-পাল্টা হামলা ও যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষাপট
এই বক্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন ভারতের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তোলে, যদিও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এরপর মে মাসের শুরুতে ভারত সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায়, যাতে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পাকিস্তান পাল্টা জবাবে ৫টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এবং ভারতের অভ্যন্তরে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
হাইব্রিড যুদ্ধ ও পানি চুক্তির হুমকি
শেহবাজ শরিফ বলেন, “আজ পাকিস্তানের প্রতি হুমকি কেবল সামরিক নয়—বরং সাইবার আক্রমণ, অর্থনৈতিক চাপ, ভুয়া প্রচার এবং হাইব্রিড যুদ্ধের মতো বহুস্তরীয়।”
তিনি ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণাকেও কড়া ভাষায় প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “এই সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য ‘লাল রেখা’। পাকিস্তান ভারতের ঔদ্ধত্য ও একতরফা সিদ্ধান্ত কখনোই মেনে নেবে না।”
শেহবাজ শরিফের বক্তব্য একদিকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও সামরিক মনোবলকে চাঙা করতে চায়, অন্যদিকে ভারতের প্রতি কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর কৌশল হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বর্তমান বাস্তবতায় পাকিস্তান-ভারত সম্পর্কে উত্তেজনা ও স্নায়ুযুদ্ধ আরও বাড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।