ভারতের কঠিন সিদ্ধান্ত: শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে অনিশ্চয়তা তুঙ্গে

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে দিল্লি ও ঢাকা এক জটিল কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে পড়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈ
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে দিল্লি ও ঢাকা এক জটিল কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে পড়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক চিঠির মাধ্যমে ভারতের কাছে এই অনুরোধ জানানো হলেও নয়াদিল্লি তা প্রত্যাখ্যান করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক বিশদ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণে স্পটলাইট আলজাজিরার জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ইনসাইড স্টোরি’-তে এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়। সেখানে অংশ নেন ভারতের ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত, যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সোহেলা নাজনীন, এবং বাংলাদেশি নারী অধিকার সংগঠন নারীপক্ষের সহপ্রতিষ্ঠাতা শিরীন হক। অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত মন্তব্য করেন, "এই প্রত্যর্পণ কেবল আইনি বিষয় নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে গভীর রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক জটিলতা। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা কতটা নিরপেক্ষ, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকবে।" প্রত্যর্পণ চুক্তির জটিলতা ২০১৩ সালের ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, যেকোনো দেশ যদি মনে করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সুষ্ঠু বিচারের মুখোমুখি হবেন না, তাহলে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে। সোহেলা নাজনীন বলেন, "শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে ভারতের এই চুক্তির শর্ত বিবেচনা করার সুযোগ রয়েছে।" শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও বিতর্কিত ট্রাইব্যুনাল নারীপক্ষের সহপ্রতিষ্ঠাতা শিরীন হক জানান, "শেখ হাসিনার আমলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নানা বিতর্কের মধ্যে পড়ে। এখন তাকে সেই একই ট্রাইব্যুনালে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, "যদিও আমরা আশা করব সুষ্ঠু বিচারের প্রক্রিয়া মেনে চলা হবে, তবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ উঠছে, যা বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে।" ভারতের সিদ্ধান্তের উপর নজর প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, অতীতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণ করেছে ভারত। যেমন শেখ মুজিব হত্যার এক আসামি আবদুল মাজেদকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। শিরীন হকের মতে, ভারত এই উদাহরণ সামনে রেখে শেখ হাসিনার বিষয়েও সাড়া দিতে পারে। মৃত্যুদণ্ড ও মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিক্রিয়া এদিকে, নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, বাংলাদেশে যত দিন মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্ত না হবে, তত দিন ভারতকে শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের আশ্রয় দেওয়া উচিত। এই পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য সিদ্ধান্তটি কেবল কূটনৈতিক নয়, এটি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চমকপ্রদ প্রশ্ন থেকে যায়: শেখ হাসিনাকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত ভারতের রাজনৈতিক ভারসাম্য ধরে রাখতে সহায়ক হবে, নাকি তা আরও বিতর্কের জন্ম দেবে?
Комментариев нет