ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তেলেঙ্গানার সাঙ্গারেড্ডি জেলার শিল্প এলাকায় ঘটে গেছে এক ভয়াবহ ও মর্মান্তিক বিস্ফোরণ। সোমবার সকালে জেলার একটি রাসায়নিক কারখানায় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যাতে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫ জন শ্রমিক। আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন, যাঁদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিস্ফোরণের পর মুহূর্তেই ছাদ উড়ে গিয়ে পড়ে কারখানা থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে।
স্থানীয় সময় সকাল ৮টা নাগাদ এই বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানায় তেলেঙ্গানার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ এক বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। এরপর আকাশচুম্বী ধোঁয়া আর চিৎকারে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে আশপাশ। বিস্ফোরণের ভয়াবহতায় আশপাশের ঘরবাড়ি পর্যন্ত কেঁপে ওঠে।
ঘটনাস্থলে তৎক্ষণাৎ পৌঁছায় উদ্ধারকারী দল ও ফায়ার সার্ভিস। সাঙ্গারেড্ডির পুলিশ সুপার পি প্রবীণ্যা ও জেলার পুলিশ সুপার পরিতোষ পঙ্কজ সরেজমিনে উপস্থিত থেকে উদ্ধারকাজ তদারকি করেন। এখনো কারখানার ভিতরে অনেক শ্রমিক আটকে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
সাঙ্গারেড্ডির এই কারখানাটি মূলত ওষুধ তৈরির কাঁচামাল ও রাসায়নিক প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত হতো বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। বিস্ফোরণের উৎস ও কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে কারখানার ভেতরের উচ্চতাপমাত্রা, রাসায়নিক বিক্রিয়া কিংবা সুরক্ষা ত্রুটি এই বিস্ফোরণের পেছনে দায়ী হতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের সময় কারখানার ভেতরে প্রায় ৩০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের মরদেহ ঘটনাস্থলে উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়, যাঁদের কয়েকজনের অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন।
স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল আশেপাশের এলাকা ঘিরে রেখেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে সংলগ্ন আরও দুটি কারখানার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের পর কারখানার একটি অংশ ধসে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কারখানার ধাতব ও কাঁচামালের ধ্বংসাবশেষ। ধোঁয়ার কুণ্ডলি এখনো আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ জানতে এরই মধ্যে গঠন করা হয়েছে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এই দুর্ঘটনা আবারও ভারতের শিল্প কারখানাগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রতিনিয়ত নানা বিধ্বংসী দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে কারখানা ও তাদের শ্রমিকরা, কিন্তু কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখনও অপ্রতুল।
পরবর্তী আপডেট না আসা পর্যন্ত, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে প্রশাসন।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			