close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ভারতে মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার আহ্বান বাংলাদেশের..

Akhi Islam avatar   
Akhi Islam
পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রদায়িক অস্থিরতায় বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভারতীয় রাজনীতির প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল ঢাকা। বাংলাদেশ সরকারের সোজাসাপ্টা বার্তা—নিজেদের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন, দায়..

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়ানোর অপচেষ্টা নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের প্রতি কড়া বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যেকোনো প্রয়াস দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি আমরা।”

তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান, ভারতীয় রাজনীতিকদের একাংশ এই ইস্যুতে বাংলাদেশকে অযথা দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছে, যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।

ভারতীয় মুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি ঢাকার

শফিকুল আলম আরও বলেন, “আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করছি—সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলিমদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অযথা প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকতে।”

ঢাকা মনে করে, এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার এক প্রচেষ্টা, যার ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব পড়তে পারে।

ঘটনার পটভূমি: ওয়াকফ আইন নিয়ে উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, নতুন ওয়াকফ আইন নিয়ে মুর্শিদাবাদ, মালদা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলিসহ কয়েকটি জেলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসে, একাধিক জায়গায় অগ্নিসংযোগ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে হয়।

এই পরিস্থিতির মাঝেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নাম টেনে আনেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে একটি বৈঠকের পর এই সহিংসতা উসকে দেওয়া হয়েছে।

এই মন্তব্য ঘিরেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে শুরু হয় তীব্র কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া।

‘অভ্যন্তরীণ সংকটে অন্যকে জড়ানো বিপজ্জনক’

ঢাকার মতে, ভারতের অভ্যন্তরীণ সংকট ও রাজনৈতিক ব্যর্থতা অন্য দেশের ওপর চাপানোর প্রবণতা আন্তর্জাতিক কূটনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ। মুসলিমদের ওপর হামলার ঘটনায় ভারত সরকার এখনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করছে বাংলাদেশ। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, উত্তরপ্রদেশসহ ভারতের আরও বেশ কিছু অঞ্চলেও সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের খবর উঠে এসেছে বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে।

দুই দেশের সুসম্পর্কের পথে কাঁটা ফেলছে রাজনৈতিক অপপ্রচার

বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার—ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধকে যারা রাজনৈতিক ফায়দার জন্য ব্যবহার করছে, তারা শুধু উভয় দেশের বন্ধুত্বে আঘাত হানছে না, বরং একটি বৃহত্তর অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলছে।

সুরক্ষা নিশ্চিত করুন, চক্রান্ত নয়

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বার্তা স্পষ্ট—ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ভারতের কর্তব্য। একটি অভ্যন্তরীণ সংকটকে আন্তর্জাতিক ইস্যু বানিয়ে প্রতিবেশীকে দোষারোপ করার চেষ্টা রাজনৈতিকভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অগ্রহণযোগ্য। দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের স্বার্থে, এই ধরনের উত্তেজনাপূর্ণ ও ভিত্তিহীন মন্তব্য বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি।

コメントがありません


News Card Generator