রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান। সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেল “জাহেদস টেইক”-এ তিনি এমন একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন, যা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত। তার বক্তব্য অনুযায়ী, ভারত সরকার কি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশবিরোধী মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে বলেছে? এই প্রশ্নই এখন জনমনে নানা কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।
জাহেদ উর রহমান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ভারতের রাজনৈতিক বিশ্লেষক শ্রীরাধা দত্ত সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে শেখ হাসিনা ভারতের মাটিতে বসে বাংলাদেশ নিয়ে আগের মতো আক্রমণাত্মক বক্তব্য আর দিচ্ছেন না। বরং তার মন্তব্যে সংযম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শ্রীরাধা মনে করছেন, সম্ভবত ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে কোনো বার্তা দেওয়া হয়েছে। যদিও জাহেদ উর রহমান এই ধারণার সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন, তবু তিনি মনে করেন এতে রাজনৈতিক ইঙ্গিত লুকিয়ে থাকতে পারে।
শেখ হাসিনা এখনো বিভিন্ন জায়গায়—বিশেষ করে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে—নিয়মিত বক্তব্য রাখছেন। ফলে বলা যায়, তিনি সম্পূর্ণ নীরব নন।” তবে তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে, শ্রীরাধা দত্ত ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত এবং তার মন্তব্যে রাজনৈতিক কৌশল বা প্রভাব থাকা অস্বাভাবিক নয়।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার অবস্থান ভারতীয় কূটনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। “যদি শেখ হাসিনা বিদেশে থেকে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ানোর চেষ্টা করেন, তাহলে সেটা ভারতের জন্যও কূটনৈতিক চাপের কারণ হতে পারে,” মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলমান মামলার রায় নির্বাচনের আগে ঘোষণা হতে পারে। যদি তিনি দণ্ডিত হন এবং বিদেশে থেকে বক্তব্য দিতে থাকেন, তাহলে সেটি ভারতের জন্যও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করবে।
রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের উচিত শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর দাবি জোরদার করা। যদি তা না-ও হয়, অন্তত বিদেশে বসে তার বাংলাদেশবিরোধী মন্তব্য বন্ধে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ তৈরি করা প্রয়োজন।
ভারতের উচিত শেখ হাসিনার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসা, কারণ তা ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে তাদের জন্য ব্যুমেরাং হতে পারে।
জাহেদের এই মন্তব্যে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন এটি একটি বাস্তব রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, আবার কেউ মনে করছেন এটি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে অযথা বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা। তবে যে যাই বলুক, তার এই বক্তব্য সামাজিকমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
শেষ পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে—ভারত আসলেই কি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছে, নাকি এটি কেবল রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কল্পনা?