close
  
  
         
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
ভারত কেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে নাক গলায়, যখন ভারতের সংখ্যালঘুদের অবস্থা শোচনীয়?
					ভারত বরাবরই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবস্থা নিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করে আসছে। তারা প্রায়ই দাবি করে যে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন চলছে এবং তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ভারত কেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে এত উদ্বিগ্ন, যখন তাদের নিজেদের দেশে সংখ্যালঘু, বিশেষত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে?
ভারত বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে প্রায়ই কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এ নিয়ে তারা নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করে, যা অনেক সময় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। অথচ, ভারতের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি যদি দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে, তাদের দেশে মুসলমানরা চরম বৈষম্যের শিকার। গুজরাট দাঙ্গা, দিল্লি দাঙ্গা, ধর্মীয় মব লিঞ্চিং—এসব ঘটনাগুলোই বলে দেয় ভারতের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার অবস্থা কতটা শোচনীয়।
ভারতের এই নাক গলানোর প্রবণতা নতুন নয়। এটি শুরু হয় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে। সেই সময় ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতায় সহায়তা করার জন্য তাদের কূটনৈতিক ও সামরিক সমর্থন দিয়েছিল। এর ফলে তারা নিজেদের একটি নৈতিক অবস্থান তৈরি করে এবং বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করার প্রবণতা দেখায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায়, সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের এই নাক গলানোর মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতের সংখ্যালঘুদের বিশেষত মুসলিমদের পরিস্থিতি বর্তমানে ভয়াবহ। গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগে মুসলমানদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ধর্মীয় বৈষম্যকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের বঞ্চিত করা হয় নাগরিক সুবিধা থেকে। "সিএএ-এনআরসি" এর মতো বিতর্কিত আইন মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। উত্তর প্রদেশ, আসাম, গুজরাট—প্রতিটি অঞ্চলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনক। তা সত্ত্বেও ভারত বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে নৈতিক অবস্থান নিতে চায়, যা অনেকাংশেই দ্বৈতনীতির উদাহরণ।
ভারতের এই নাক গলানোর উদ্দেশ্য কী?
১. রাজনৈতিক ফায়দা তোলা:
ভারত তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতা আড়াল করতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করতে চায়।
২. আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি:
ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে একটি নৈতিক অবস্থান তৈরি করে তাদের প্রভাব বিস্তার করতে চায়। এটি মূলত দক্ষিণ এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের কৌশল।
৩. বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব:
সংখ্যালঘু ইস্যুতে চাপ প্রয়োগ করে তারা বাংলাদেশের শাসক দলের ওপর তাদের প্রভাব বজায় রাখতে চায়। বিশেষ করে শেখ হাসিনার সরকার ভারতের প্রতি অনেকটাই নির্ভরশীল।
ভারতের দ্বৈতনীতি: কথায় এক, কাজে আরেক
ভারতের এই নাক গলানোর আচরণ সরাসরি দ্বৈতনীতির পরিচায়ক। তারা যদি সত্যিই সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়, তাহলে কেন তারা নিজেদের দেশের সংখ্যালঘুদের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ?
ভারতে মুসলিমদের অবস্থা দেখে স্পষ্ট যে, তারা শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষায় মনোযোগী। এ অবস্থায় তাদের বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে নাক গলানো হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয়।
বাংলাদেশের অবস্থান কী হওয়া উচিত?
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, যেখানে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষায় নীতিগত ও সাংবিধানিক অঙ্গীকার রয়েছে। যদিও কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে, তা বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিকে প্রতিনিধিত্ব করে না।
বাংলাদেশ সরকার ও নাগরিক সমাজের উচিত এই ইস্যুতে শক্ত অবস্থান নেওয়া। আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের দ্বৈতনীতি তুলে ধরে কূটনৈতিকভাবে তাদের এই আচরণের বিরোধিতা করা জরুরি।
ভারতের সংখ্যালঘুদের জন্য যে দেশীয় অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটি সমাধান না করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে নাক গলানো তাদের দ্বৈতনীতি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের পরিচায়ক। বাংলাদেশকে অবশ্যই তাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এবং অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রতিহত করতে সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে।
"যে নিজের ঘর সামলাতে পারে না, তার অন্যের ঘরে নাক গলানো শোভা পায় না।
লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন 
লেখক ও সাংবাদিক
#IndiaBangladeshRelations #MinorityRights #DiplomaticHypocrisy #BangladeshIndiaPolitics #HumanRightsViolations #ReligiousFreedom #SouthAsianPolitics #IndiaMuslimMinorities
					
					
					
					
					
					
    
					
					
			
					
					
					
					
					
					
					
				
				
				
				No comments found
							 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			