রংপুরের এক সুধী সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের ক্ষতির পাঁয়তারা করে আসছে। তারা কখনো দেশের স্বার্থে চিন্তা করেনি।
জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের অন্যতম সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম এক বক্তব্যে বলেছেন, ভারত কখনোই বাংলাদেশের প্রকৃত মঙ্গল চায়নি। বরং বরাবরই তারা আমাদের রাষ্ট্রীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, "ভারত সবসময় তার নিজস্ব স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশের জন্য তাদের কখনো সদিচ্ছা ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। তারা আমাদের ক্ষতির জন্য প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।"
এই বক্তব্যটি তিনি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের ঝাড়ুয়ার বিল এলাকায় আয়োজিত একটি সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তুলে ধরেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের জামায়াত নেতৃবৃন্দ।
এটিএম আজহার আরও বলেন, “ভারতের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের দলের শীর্ষ নেতাদের একে একে গ্রেপ্তার করে, তাদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দলকে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা করেছে। শেখ হাসিনাকে তিনি সরাসরি 'স্বৈরাচারী খুনি' বলে অভিহিত করেন। তবে আল্লাহর অশেষ রহমতে সেই নীলনকশা সফল হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “লগি বৈঠার রাজনীতি দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রকাশ্য দিবালোকে আমাদের নেতাদের হত্যার পর লাশের ওপর উল্লাস করেছে। কিন্তু সেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও জামায়াতের নেতাকর্মীরা দমে যায়নি। আমাদের সাহসী তরুণরা জুলাই-আগস্টে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হাসিনার অন্যায় ও জুলুমের জবাব দিয়েছে। তারা একপ্রকার নতুনভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে।”
আজহারুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেন, “এই স্বাধীনতাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। আমরা আর কোনো অত্যাচারী, চাঁদাবাজ ও দেশবিরোধীদের হাতে বাংলাদেশকে তুলে দিতে পারি না। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাইয়ের শপথ বাস্তবায়ন করতে হবে। ইনশাআল্লাহ, সেই লক্ষ্যে আমরা অগ্রসর হব।”
সুধী সমাবেশটি আয়োজন করেন স্থানীয় জামায়াত নেতারা। সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন সভাপতি শামসুল ইসলাম মিলিটারি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রংপুর জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, বদরগঞ্জ উপজেলা আমির কামরুজ্জামান, উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা মিনহাজুল ইসলামসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
এই সমাবেশে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক, বর্তমান সরকার কর্তৃক জামায়াত নেতাদের নিপীড়ন এবং রাজনৈতিক প্রতিরোধের নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বক্তব্যগুলোতে জোর দিয়ে বলা হয়, দেশের স্বাধীনতা, ইসলামী মূল্যবোধ এবং জনগণের অধিকার রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম করতে হবে।