ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: বেশ কিছু দিন ধরেই ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান নিয়ে স্থানীয়ভাবে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছিল। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ ছিল, সেবার মান কমে গেছে, চিকিৎসা নিতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি পরিষ্কার করতে এবং বাস্তব চিত্র সবার সামনে উপস্থাপন করতে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও), ভালুকা, সম্প্রতি মাসিক সমন্বয় সভায় গত এক মাসের সেবা প্রদানের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।
তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিম্নোক্ত সেবা প্রদান করেছে, জরুরি বিভাগে সেবা নিয়েছেন ৪,০২২ জন। বহির্বিভাগে সেবা নিয়েছেন ২১,৮৩৭ জন। মেজর সার্জারি হয়েছে ২টি। মাইনর সার্জারি হয়েছে ৩,২৭৫টি। ল্যাব ফ্যাসিলিটি গ্রহণ করেছেন ৭৭৬ জন। নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ৭৫টি। এক্স-রে করা হয়েছে ৬০৬টি। ইসিজি করা হয়েছে ৮০টি।
এই বিশাল সংখ্যক সেবা মাত্র ২০ জন চিকিৎসক দিয়ে পরিচালিত হয়েছে, যা একটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়াও, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়েট সরবরাহের মান আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন অনেক রোগী ও স্বজনরা। হাসপাতালের সার্বিক সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউএইচএফপিও এবং তার টিম কাজ করে যাচ্ছেন বলেও সভায় জানানো হয়।
স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিগগিরই একটি অনুসন্ধান ডেস্ক চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে। এই ডেস্ক থেকে রোগীরা প্রয়োজনীয় তথ্য, অভিযোগ বা পরামর্শ প্রদান করতে পারবেন, যা তাৎক্ষণিকভাবে বিবেচনায় নিয়ে সমাধান করা হবে।
ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এক বার্তায় জানান, স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নত করতে তিনি নিজেও সরাসরি সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা একসাথে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর কাজ করবো, হাসপাতালের সামগ্রিক পরিবেশ উন্নয়ন, দালালমুক্ত হাসপাতাল গড়া, চুরি ও ছিনতাই রোধে কার্যকর ব্যবস্থা, রোগীদের জন্য উন্মুক্ত ঔষধের তালিকা প্রণয়ন, ল্যাব এবং এক্স-রে সেবা কখনোই বন্ধ না থাকার নিশ্চয়তা।
ইউএনও আরও জানান, জনগণের পরামর্শের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যাতে ভালুকা উপজেলার জনগণ তাদের প্রাপ্য স্বাস্থ্যসেবা নির্বিঘ্নে লাভ করতে পারেন।
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও ও তার টিম এ সময় জানান, তাঁরা সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। রোগীর অধিকার ও চাহিদার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে, একটি আধুনিক, স্বচ্ছ ও কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই তাঁদের চলমান প্রচেষ্টা।