close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

বগুড়ার শিবগঞ্জে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পিওন কর্তৃক ল্যাপটপ চুরি- দেড় মাসেও কতৃপক্ষের নেই ব্যবস্থা..

মিনহাজুল বারী avatar   
মিনহাজুল বারী
****

বগুড়ার শিবগঞ্জে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পিয়ন কর্তৃক ল্যাপটপ চুরি অতঃপর স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে হাতেনাতে ধরা পরার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বড়িয়াহাট এলাকার হাবিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে এ ঘটনাটি ঘটে। এঘটনায় দেড় মাসেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কলেজ কতৃপক্ষ। এছাড়াও অত্র প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় লোকজন।

জানাগেছে, হাবিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে প্রায় ৩০ বছর যাবত পিয়ন হিসেবে কর্মরত রয়েছেন চকসৈয়দপুর এলাকার মো. জাহিদুল ইসলাম। শুরু থেকেই অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলীর সাথে তার সু-সম্পর্ক বিদ্যমান। সেইসুত্রে প্রতিষ্ঠান ও অধ্যক্ষের অভ্যন্তরীন প্রায় সকল কাজকর্মেই তার হস্তক্ষেপ রয়েছে। তবে একজন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী হিসেবে তা কোন ভাবেই নিয়মের মধ্যে পরেনা। কারন উক্ত প্রতিষ্ঠানে হাইস্কুল ও কলেজ শাখা মিলে শিক্ষক-প্রভাষক সহ প্রায় ৫৫ জন স্টাফ কর্মরত রয়েছে। এতেকরে প্রত্যেক কাজের জন্যও ঠিক আলাদা আলাদা ব্যাক্তি নিয়োগ করা আছে বলে জানাগেছে।
অত্র কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী জানান, হাবিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ডিজিটাল ল্যাবে মোট ১৭ টি ল্যাপটপ রয়েছে। এরমধ্যে ১ টি ল্যাপটপ কলেজ শাখার পিয়ন জাহিদুল ইসলাম চুরি করে। পরবর্তীতে চুরিকৃত ল্যাপটপটি অন্যত্র বিক্রি করে এবং সেটি উদ্ধারও করা হয়েছে। কিন্তু উদ্ধারের কথা বললেও বাস্তবে তাদের নিকট ওই ল্যাপটপের দেখা মেলেনি।

এদিকে অত্র কলেজের ডিজিটাল ল্যাবে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ১৭টির পরিবর্তে মাত্র ৮টি ল্যাপটপ রয়েছে। আর ৩ টি ল্যাপটপ দেয়া হয়েছে স্কুল শাখায়। তবে ১১টি ল্যাপটপের সন্ধান মিললেও দেখা মেলেনা বাকি ৬ টির। জানতে চাইলে কলেজ কতৃপক্ষ বলেন প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন কাজের জন্য কিছু শিক্ষক ওই ল্যাপটপ গুলো তাদের বাড়িতে নিয়ে গেছেন। এরমধ্যে ১টি রয়েছে আইসিটি প্রদর্শক মো. ফজলুল হকের বাড়িতে, ১টি আইসিটি প্রভাষক শহিদ হাসান পাপুলের বাড়িতে, ১টি আইসিটি শিক্ষক খায়রুল আমিনের বাড়িতে, ১টি প্রভাষক ফারুক হোসেনের বাড়িতে, ১টি কেরানি আনোয়ার সাদাত এর বাড়িতে এবং অপরটি চুরি। তবে সবকয়টি ল্যাপটপের বিষয়ে কলেজের ভলিউম খাতায় রেকর্ড রয়েছে বলে জানান অত্র কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলী। কিন্তু গল্পটি সত্য মনে হলেও বাস্তাবে দেখা যায় তার ভিন্নরুপ। পরবর্তীতে তিনি ওই ভলিউম খাতা দেখালে সেখানে এর কোন হদিসই মেলেনা। 

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় ১৬ জুন গতকাল সোমবার তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটিতে রয়েছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের সহকারি অধ্যাপক আব্দুল্লাহেল কাফি, দিদার হোসেন এবং অপরজন ফেরদৌসি বেগম লাকি। 
ঘটনার প্রায় দেড় মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠান কতৃপক্ষের কোন পদক্ষেপই ছিলনা। আর চোর সনাক্ত হবার পরে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিষয়টি অনেকেই লোক দেখানো প্রক্রিয়া বলে মনে করছেন।
এদিকে চুরিকৃত ল্যাপটপ ক্রেতার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হাবিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের পিয়ন জাহিদুল ইসলাম প্রায় দেড় মাস পুর্বে তার নিকট ওই কলেজের একটি ল্যাপটপ ৪,৫০০ টাকায় বিক্রি করে। যা ব্যবহারের অনুপযোগী ছিলো। একারনে সে জাহিদুলকে ওই ল্যাপটপটি ফেরত নিতে বলে। এতে জাহিদুল সেটি পুনরায় বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির চেষ্টা করতে থাকে। একপর্যায়ে জাহিদুল স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পরে। তিনি জাহিদুলের নিকট জানতে পারেন ওই প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ গুলো যে যার মতো করে বাড়িতে নিয়ে ব্যাবহার করে। এরমধ্যে কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলীও রয়েছে। ঠিক তেমনি পিওন জাহিদুলও তার বাড়িতে একটি ল্যাপটপ নিয়ে ব্যবহার করতো।
এবিষয়ে এলাকার স্থানীয় লোকজন বলেন, ওই কলেজটি নানা অনিয়মে ভরপুর। আর এই অনিয়মের মুলে রয়েছে অত্র কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী। তিনি সকল কাজেই পিওন জাহিদুলকে বেশি প্রাধান্য দিতেন। সুধু তাই নয় জাহিদুল বিভিন্ন সময় কলেজে অনুপস্থিত থেকেও অধ্যক্ষের সহযোগিতায় নিয়মিত বেতন উত্তলোন করতো।
তার কাজকর্ম ও চলাফেরায় মনেই হয়না সে একজন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী। তাই একমাত্র অধ্যক্ষের আস্কারাতেই জাহিদুলের আজ এই পরিনতি। তবে এই চুরির পেছনে বড় কোন রহস্য লুকিয়ে আছে বলেও মনে করেন স্থানীয় অনেকেই।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator