বগুড়া প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হলো বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচন। দীর্ঘদিনের জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নতুন নেতৃত্ব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রেজাউল হাসান রানু সভাপতি ও কালাম আজাদ সাধারণ সম্পাদক। গত শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সদস্যদের ব্যাপক অংশগ্রহণে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নির্বাচনী পরিবেশ। ১৬৮ সদস্যের মধ্যে ১৫৮ জন তাঁদের মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
সভাপতি পদে ছিল চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা। রেজাউল হাসান রানু পান ৭৯টি ভোট। মাত্র ৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াসিকুর রহমান বেচান, যিনি পেয়েছেন ৭৫টি ভোট। এই ফলাফল ভোটারদের মধ্যে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়ায়। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভোট গণনার সময় একাধিকবার ভোট পুনঃগণনার দাবি ওঠে।
সাধারণ সম্পাদক পদে কালাম আজাদ পেয়েছেন ৮১টি ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সবুর শাহ লোটাস পেয়েছেন ৭১টি। এখানেও জয়-পরাজয়ের ব্যবধান ছিল তুলনামূলকভাবে কম। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, কালাম পিছিয়ে পড়বেন; কিন্তু ফল উল্টো হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় মূলত দুটি প্যানেলের মধ্যে।
১. জাতীয়তাবাদী ইসলামী ঐক্য প্যানেল — সমর্থনপুষ্ট বেচান-কালাম পরিষদ।
২. রানু-লোটাস পরিষদ — যাদের হয়ে মাঠে নামেন রানু ও লোটাস।
কিন্তু চমক আসে শেষ মুহূর্তে। বেচান-কালাম প্যানেলের জুটি ছিন্ন হয়ে যায় একজন জয়ী এবং একজন পরাজিত হওয়ার মাধ্যমে। অপরদিকে, রানু-লোটাস পরিষদ থেকেও শুধু রানু জিতলেও লোটাস পরাজিত হন।
২১টি পদে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে মোট ৪৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নিচে কার্যনির্বাহী কমিটির বিভিন্ন পদে বিজয়ীদের তালিকা তুলে ধরা হলোসহ-সভাপতি পদে:
-
রাহাত আহম্মেদ রিটু
-
মীর সাজ্জাদ আলী সন্তোষ
-
মীর্জা সেলিম রেজা
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক:
-
তোফাজ্জল হোসেন
-
সাইফুল ইসলাম
কোষাধ্যক্ষ:
-
তানভীর আলম রিমন
দপ্তর সম্পাদক:
-
রেজাউল হক বাবু
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক:
-
শেখ সাহেদ
ক্রীড়া সম্পাদক:
-
আব্দুর রহিম
পাঠাগার সম্পাদক:
-
জাফর আহম্মেদ মিলন
কার্যনির্বাহী সদস্য (৯ জন):
-
মহসিন আলী রাজু
-
অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান
-
আব্দুর রহিম বগরা
-
শামীম আহমেদ
-
জহুরুল ইসলাম
-
শাহ আলম শেখ মুক্তার
-
সাহেদুজ্জামান সিরাজ বিজয়
-
গোলজার হোসেন মিটু
-
হারুন উর রশীদ তালুকদার
নির্বাচন ঘিরে বগুড়ার সাংবাদিক মহলে দিনভর উত্তেজনা ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেক ভোটার নির্বাচনী পরিবেশকে ‘অভূতপূর্ব’ বলে অভিহিত করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, এবার প্রথমবারের মতো ক্লাবের নেতৃত্বে আসলো সত্যিকার গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব।
প্রেস ক্লাবের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, নির্বাচন ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেছে বলে ভোটাররা জানিয়েছে।
বগুড়া প্রেস ক্লাবের এবারের নির্বাচন ছিল উত্তেজনাপূর্ণ, প্রতিযোগিতামূলক এবং অংশগ্রহণমুখর। নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রেস ক্লাবের অগ্রগতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলেই মনে করছেন সবাই। এখন দেখার বিষয়—নতুন সভাপতি রানু ও সম্পাদক কালাম কীভাবে সাংবাদিক সমাজের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন।