বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
বরগুনার বেতাগীতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কমিটিতে আওয়ামী লীগ নেতা সহ মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম থাকায় বিএনপি পন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের পর ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলতাফ হোসেনকে সভাপতি ও মোঃ খলিলুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট বেতাগী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের কমিটি অনুমোদন দেন।
এরপর থেকেই সমালোচনায় জায়গা করে নেয় এই কমিটি।
সভাপতি করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলতাফ হোসেনকে। যিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী আপন ছোট ভাই এ্যাড. মিজানুর রহমানের ডাব প্রতিকে ভোট চাওয়ায় সক্রিয় ছিলেন বলে জানা যায়। তার ছেলে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিল। শ্বশুরবাড়ী বরিশালের সাগরদী হওয়ায় দীর্ঘদিন সেরনিয়াবাদ পরিবারের সংস্পর্শে থেকে বাড়ী গাড়ি করেছেন ওখানেই। ভোটারও হয়েছেন বরিশালে। তিনি বেতাগীতে অস্থায়ী এবং বিএনপি মতাদর্শের বাইরে থেকেও সভাপতি পদ পাওয়ায় ক্ষোভ দেখা গেছে অন্যদের মাঝে। এছাড়াও তিনি তার কমিটিতে সহ-সভাপতি করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ আলাউদ্দিন খানকে। যিনি কয়েকদিন আগে মারা গেছে। তিনি ছিলেন আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ কর্মী। তার ছেলে মহিউদ্দিন বর্তমান যুবলীগ নেতা। যুগ্ম সাধারন সম্পাদক করা হয়েছে মৃত মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলমকে। তাকে আবার ১৪ নম্বর সদস্য পদেও রাখা হয়। কোষাধ্যক্ষ করা হয় ৪নং মোকামিয়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুধীর রঞ্জন মন্ডলকে। ২০ নম্বর সদস্য করা হয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ১নং বিবিচিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওয়াব হোসেন নয়নের ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলতাফ হোসেন খানকে। ১৮ নম্বর সদস্য করা হয় আওয়ামী রাজনীতি করা বীর মুক্তিযোদ্ধা বুদেব কর্মকারকে(মুক্তিবার্তা)। যিনি বর্তমানে ভারতে বাস করছেন।
সহ প্রচার সম্পাদক করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান মিয়াকে। যিনি দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় রয়েছেন। ১৭ নম্বর সদস্য করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল ইসলামকে। যিনি অনেক আগে মারা গেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা ও মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কমিটি হওয়ার পর থেকেই সমালোচনার জন্ম দেয়।
কেউ কেউ বলছেন সভাপতি হয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্যই এমন একটি কমিটি সাজিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ।
তবে এসব মিথ্যা বলে দাবী করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আলতাফ হোসেন বলেন, আমি আওয়ামী লীগ না। আর কেউ যদি এক দল থেকে অন্য দলে আসতে চায় তাহলে তাকে আমার নিতে সমস্যা কি? আমার এক বন্ধু বঙ্গবন্ধু পরিষদে নাম দিয়েছিল।
যেহেতু বলছেন সেহেতু আমি সংশোধন করে নিব। আর আমার বিরুদ্ধে ওঠা সকল কথা অসত্য’’।
বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী মৃধা মানবজমিনকে বলেন, আমরা শুনেছি। অতি দ্রুতই বেতাগীর কমিটি যাচাই করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ নিজ ব্যাক্তি স্বার্থে এমন কাজ করলে তাও দেখা হবে’’।