বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রমরমা, ৭৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ আবিষ্কার
সম্প্রতি বাংলাদেশের সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি মামলার খবর শিরোনাম হয়েছে। এক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবার জ্ঞাতআয়বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রাথমিক অনুসন্ধানে এই অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছে এবং মামলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দুদকের তদন্তে জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ৩৯ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং এসব সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার বিস্তারিত: একটি মামলায় শুধুমাত্র বেনজীর আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫১ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৯ হাজার ৬০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী জীসান মির্জার বিরুদ্ধে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকার জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ১৬ কোটি ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সম্পদগুলি মূলত বেনজীর আহমেদের অবৈধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে।
এছাড়া, বেনজীর আহমেদ এবং তার মেয়ে ফারহিন রিশতা বেনজীরের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৭৫ লাখ ২৭৪ টাকার জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে, এবং অপর একটি মামলায় বেনজীর আহমেদ ও তার মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অর্থ ও সম্পত্তি জব্দ: ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের নির্দেশে, বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ (ক্রোক) করা হয়েছে। এর মধ্যে গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট, সাভারে একটি জমি এবং মাদারীপুরে ১১৪টি সম্পত্তি রয়েছে। এর আগে, ২৩ মে ৮৩টি দলিলে ক্রয়কৃত সম্পত্তি ক্রোক করা হয় এবং ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সিকিউরিটিজের টাকা অবরুদ্ধ করা হয়।
এ সব তথ্য উদঘাটনের পর, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২২ এপ্রিল বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিসান মির্জা এবং দুই মেয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধান দলটি প্রধান ছিলেন দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম এবং তার দুই সহকারী পরিচালক নিয়ামুল আহসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন।
এখন দেখার বিষয়, এই মামলাগুলোর চূড়ান্ত ফলাফল কি হতে চলেছে, এবং দেশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
No comments found



















