close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

"বেকারত্বের ভয়াল চিত্র: দেশে প্রকৃত বেকার কয়েক কোটি?"

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে বেকারত্বের চিত্র উদ্বেগজনকভাবে প্রকট। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে দেশে বেকারের সংখ্যা
বাংলাদেশে বেকারত্বের চিত্র উদ্বেগজনকভাবে প্রকট। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৪০ হাজারে পৌঁছেছে, যা বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ৫০ হাজার বেশি। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকৃত বেকার সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়েও বহুগুণ বেশি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি শেষ সাত দিনে অন্তত এক ঘণ্টা অর্থ-উপার্জনকারী কাজ করেন, তবে তিনি বেকার নন। এই সংজ্ঞা অনুসরণ করে বিবিএস তাদের হিসাব তৈরি করে। কিন্তু বাস্তবে এই সংজ্ঞা বহু "ছদ্মবেশী বেকার" জনগোষ্ঠীকে হিসাবের বাইরে রাখছে। রংপুরের মুক্তা নামের একজন স্নাতকধারী দুইটি টিউশনি করে জীবিকা নির্বাহ করলেও নিজেকে বেকার মনে করেন। একইভাবে, রাজধানীর আফরোজা স্বল্প লাভে শীতের কাপড় বিক্রি করলেও বেকার হিসেবে বিবেচিত নন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) রিসার্চ ফেলো ড. এস এম জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, "বেকারত্ব নিরূপণে সপ্তাহে এক ঘণ্টার কাজকে মানদণ্ড ধরা যৌক্তিক নয়। আয়ের পরিমাণকে বিবেচনায় আনলে প্রকৃত চিত্র পাওয়া যেত।" বেকারত্বের আরেকটি ভয়াবহ দিক বিবিএসের তথ্যমতে, দেশে মোট শ্রমশক্তি ৭ কোটি ২২ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে কর্মে নিয়োজিত ৬ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার, আর বেকার জনগোষ্ঠী ২৬ লাখ ৪০ হাজার। কিন্তু শ্রমশক্তির বাইরের প্রায় ৫ কোটি মানুষ, যারা ছাত্র, গৃহিণী, অবসরপ্রাপ্ত বা কাজের প্রতি অনিচ্ছুক, তাদের নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয় না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা বলছে, স্নাতক সম্পন্ন করার তিন বছর পরও শিক্ষার্থীদের ২৮% বেকার। আর লন্ডনের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) তথ্যমতে, ১০০ জন স্নাতকধারীর মধ্যে ৪৭ জনই চাকরিহীন। সরকারি প্রতিবেদন নিয়ে জটিলতা বিবিএস সাধারণত প্রতিবছর অক্টোবর মাসে তাদের ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ প্রকাশ করে। কিন্তু ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের রিপোর্ট এখনও প্রকাশ পায়নি। এ বিষয়ে বিবিএস-এর পরিচালক মুহাম্মদ আতিকুল কবীর জানিয়েছেন, "রিপোর্ট প্রস্তুত হয়েছে, শীঘ্রই এটি প্রকাশ করা হবে।" বেকারত্বের সমাধান কোন পথে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা অত্যাবশ্যক। ব্যবসায়িক অস্থিরতা, প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়া, এবং সীমিত আয়—এই সবকিছু মিলিয়ে বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ছে। নতুন সংজ্ঞা এবং পদ্ধতি অনুসরণ করে যদি প্রকৃত বেকারত্ব নিরূপণ করা যায়, তবে এ সংকটের বাস্তব চিত্র প্রকাশ পাবে। এক্ষেত্রে আয়ের পরিমাণ এবং টেকসই কাজের সুযোগকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। বেকারত্ব সংকট শুধু পরিসংখ্যানের বিষয় নয়, এটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক বড় চ্যালেঞ্জ। এখন সময় এসেছে সমস্যার মূলে গিয়ে সমাধান খোঁজার।
No comments found


News Card Generator