close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

বাংলার রেশম শিল্পে কেন এই মরণদশা? জানুন কৃষকের সামনে থাকা মূল বাধাগুলো

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কৃষকের রেশম চাষে বাধার ইতিহাস বাংলায় রেশম শিল্পের শুরু ১৬৭০ সালের দিকে, ডাচদের হাত ধরে। আঠারো শতকের ত্রিশের দশকে ইংরেজ কোম্পানি এই ব্যবসায় নেতৃত্ব দেয়। বাংলার র
কৃষকের রেশম চাষে বাধার ইতিহাস বাংলায় রেশম শিল্পের শুরু ১৬৭০ সালের দিকে, ডাচদের হাত ধরে। আঠারো শতকের ত্রিশের দশকে ইংরেজ কোম্পানি এই ব্যবসায় নেতৃত্ব দেয়। বাংলার রেশম ছিল ইরান ও চীনের তুলনায় সস্তা এবং লাভজনক। ১৭৫৭ সালের আগেই বিশ্বের মোট রেশম উৎপাদনের ৮ ভাগ আসত বাংলার মেদিনীপুর, রাজশাহী, ও রংপুর অঞ্চল থেকে। কিন্তু, সময়ের পরিবর্তনে বাংলার এই সোনালি ঐতিহ্য আজ ম্রিয়মান। রংপুর, যা একসময় রেশম চাষের কেন্দ্রে ছিল, এখন দারিদ্র্যের শীর্ষে। রেশম শিল্পে কৃষকদের জন্য তৈরি হয়েছে একের পর এক বাধা। রেশম চাষে আধুনিক বাঁধা রংপুর তুঁত বোর্ডে গিয়ে দেখা গেল, প্রকল্পের বাজেট ছাড়া কৃষকেরা চারা বা লার্ভা পান না। একজন নিবন্ধিত কৃষক মাত্র এক বিঘা জমিতে রেশম চাষের অনুমতি পান। তাদের চাহিদামতো লার্ভা সরবরাহও সীমিত। ফলে বড় আকারে চাষ করা কঠিন। রেশম উৎপাদন একটি কৃষি ও কুটিরশিল্প। একসময় কৃষক মাঠে তুঁতগাছ চাষ করতেন এবং কৃষকবধূরা ঘরে রেশম পোকা পালন করতেন। কিন্তু বর্তমানে, চাষের নিয়মগুলো এতটাই জটিল যে আগ্রহী কৃষকেরাও এতে অংশ নিতে পারছেন না। প্রাচীন পদ্ধতির সহজতর সমাধান উনিশ শতকে প্রাচীন পদ্ধতিতে রেশম চাষ ছিল সহজ। একটি ঘরে ২০০ কাহন পোকা ছড়িয়ে দেওয়া হতো। বাঁশের খুঁটির নিচে পানিভর্তি পাত্র রেখে পোকাগুলোকে রক্ষার ব্যবস্থা করা হতো। তবে এখন আধুনিকতার নামে জটিল ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, যা চাষীদের দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। ফ্রিজের বিশেষ ব্যবস্থায় লার্ভা সংরক্ষণ করায় এটি আর সহজলভ্য নয়। অথচ আগে ফ্রিজ ছাড়াই আমাদের কৃষকেরা সফলভাবে রেশম উৎপাদন করতেন। রেশম শিল্প পুনরুদ্ধারে করণীয় সরকারি প্রণোদনার কেন্দ্রিক ব্যবস্থা একদিকে অসাধু চক্র তৈরি করছে, অন্যদিকে আগ্রহী কৃষকদের হতাশ করছে। তাঁতিরা রেশমের অভাবে পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। রেশম শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে হলে সরকারকে লার্ভা বিক্রিতে উদার হতে হবে এবং কৃষকদের জন্য বড় পরিসরে চাষের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। রেশম শিল্পের এই মরণদশা থেকে মুক্তি পেতে হলে কৃষি ও শিল্পকে একসঙ্গে সমৃদ্ধ করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। প্রাচীন পদ্ধতির সরলতা ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়েই বাংলার রেশম শিল্প আবার প্রাণ ফিরে পাবে।
Keine Kommentare gefunden