close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
বাংলাদেশের বাঁধ নির্মাণে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লিতে নালিশ, সৃষ্ট হয়েছে নতুন উত্তেজনা


লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন
ত্রিপুরা, ভারত: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বাঁধ নির্মাণের ঘটনায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. মণিক সাহা ভারত সরকারের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গত বছর ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মণিক সাহা দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভারতের সহযোগিতা ছাড়া উন্নতি করবে না। তার এই মন্তব্যের পর, বর্তমানে বাংলাদেশের সরকারের দ্বারা নির্মাণাধীন বিশাল বাঁধের বিষয়ে তিনি দিল্লিতে অভিযোগ জানিয়েছেন, যা ত্রিপুরার কাছাকাছি Kaila Town সাবডিভিশনে অবস্থিত।
১৫ জানুয়ারি বুধবার, ত্রিপুরা বিধানসভায় এক প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এই বিষয়টি উত্থাপন করেন। সেখানে রাজ্য কংগ্রেস দলের বিধায়ক বিরাজিত সিনহা বাংলাদেশের বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি তুলে ধরেন। মণিক সাহা বলেন, বাংলাদেশের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তিনি ইতিমধ্যেই দিল্লিতে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে বিষয়টি আনতে প্রতিশ্রুতি দেন।
এদিকে, ত্রিপুরা রাজ্যের বাসিন্দা এবং মৎসমন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, এই বাঁধের নির্মাণ আন্তর্জাতিক একটি সমস্যা হিসেবে দেখা উচিত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গরু পাচার এখনও ঘটছে, যা এলাকার নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।
মণিক সাহা আরও বলেন, বিষয়টি একেবারেই আন্তর্জাতিক ইস্যু, এবং ইতিমধ্যে তিনি দিল্লিতে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি জানান, বিষয়টি আবারও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উত্থাপন করবেন।
উনাকোটি জেলার ডিএম ডি কে চাকমা জানান, বাংলাদেশের বাঁধ নির্মাণ হলে Kaila Town থেকে বাংলাদেশে বর্ষাকালে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
এদিকে, সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে উত্তেজনা চলছে। বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্টে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়ে গেছে, স্থানীয়রা এতে যুক্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
রবিবার, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় কুমার বর্মাকে বাংলাদেশে পাঠায়, তবে এর পরদিন বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার নূরুল ইসলামকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের অবৈধ বর্ডার ফেন্সিংয়ের বিরোধিতা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জাসিম উদ্দিন সীমান্তে বিএসএফের উসকানিমূলক কার্যক্রমের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। তিনি ভারতের সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তির ব্যাপারে সমালোচনা করেছেন এবং দাবি করেছেন, ভারতের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা উচিত।
এটি স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের বাঁধ নির্মাণ এবং সীমান্ত উত্তেজনা দুই দেশের মধ্যে আরও জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, তা এখন দেখার বিষয়।
নতুন এই পরিস্থিতি এবং উত্তেজনা দুই দেশের জনগণের মধ্যে এক নতুন ধরনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে, যার সমাধান প্রয়োজনীয়।
কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি