close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

বাংলাদেশে সামরিক অবকাঠামো নির্মাণ করতে চায় চীন, দাবি যুক্তরাষ্ট্রের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীন বাংলাদেশসহ একাধিক দেশে সামরিক অবকাঠামো গড়ার চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে চীন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক প্রভাবের সঙ্গে টক্..

বিশ্ব রাজনীতির উত্তাপ যেন আরেক ধাপ বেড়ে গেল। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (DIA) সম্প্রতি প্রকাশিত এক বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এমন দাবি করেছে যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন তাদের সামরিক উপস্থিতি জোরদারে বাংলাদেশসহ একাধিক দেশে সামরিক অবকাঠামো গড়ার পরিকল্পনা করছে।

যে দেশগুলো চীনের নজরে

বাংলাদেশ ছাড়াও চীনের এই তালিকায় রয়েছে— মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কিউবা, কেনিয়া, গিনি, সিসিলস, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া, নামিবিয়া, মোজাম্বিক, গ্যাবন, পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং তাজিকিস্তান। এসব দেশে চীন সামরিক নির্মাণ বা প্রভাব বিস্তারের কৌশলগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।

চীনের মূল উদ্দেশ্য কী?

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীনের কৌশলগত লক্ষ্য হলো পূর্ব এশিয়ায় প্রধান শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈশ্বিক নেতৃত্বে প্রতিযোগিতা, এবং তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের সাথে একীভূত করা। এছাড়া তারা প্রযুক্তিগতভাবে স্বনির্ভরতা অর্জনের চেষ্টা করছে এবং তাদের অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল ও শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছে।

চীন শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও তথ্য যুদ্ধেও নিজেদের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। এসব প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য— যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা।

শি জিনপিংয়ের ভূমিকায় জোরালো বার্তা

প্রতিবেদনে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সক্রিয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়, তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এবং এর বাইরের এলাকাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে চীনকে প্রস্তুত রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি, বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর সামরিক জোটগুলোর প্রতি জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক সমর্থন হ্রাসের কৌশল নিয়েও শি কাজ করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কা ও কৌশলগত মূল্যায়ন

যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা করছে, বেইজিং ওয়াশিংটনের নতুন নতুন নীতিগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং চীন যেকোনো সময় কৌশলগত পাল্টা পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা মনে করছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র কোনো নীতি গ্রহণ করে যা চীনের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক বা নিরাপত্তা লক্ষ্যকে ব্যাহত করতে পারে, তবে চীন শুধু প্রতিরোধই নয়, প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না।

এছাড়া প্রতিবেদনটি বলছে, চীন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির কৌশলও ব্যবহার করতে পারে। ফিলিপাইন ও তাইওয়ানের মতো দেশগুলোর ওপর চাপ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে এবং চীন যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সমালোচনার মাধ্যমে নিজেদেরকে একজন বিকল্প বৈশ্বিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।


বিশ্লেষণ ও প্রেক্ষাপট:

চীনের এমন তৎপরতা শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, গোটা বিশ্বে একটি নতুন ধরনের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করছে। বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত সহযোগিতায় আগ্রহী হলেও, সামরিক ঘাঁটির মতো স্পর্শকাতর ইস্যুতে কী পদক্ষেপ নেয়— তা এখন গভীর নজরদারির বিষয়।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশিত এই রিপোর্ট আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন তুলেছে: চীন কী সত্যিই বৈশ্বিক সামরিক আধিপত্যের পথে হাঁটছে? নাকি এটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির কৌশল?

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator