close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

আস্থা সংকটে পুলিশ বাহিনী: ট্রমা কাটিয়ে জনগণের বন্ধু হতে নতুন উদ্যোগ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশ পুলিশের জন্য সাম্প্রতিক সময়গুলো এক অভূতপূর্ব সংকট নিয়ে এসেছে। টানাপোড়েন আর সামাজিক চাপে দিন কাটছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটির। একদিকে সদস্যদের হতাশা
বাংলাদেশ পুলিশের জন্য সাম্প্রতিক সময়গুলো এক অভূতপূর্ব সংকট নিয়ে এসেছে। টানাপোড়েন আর সামাজিক চাপে দিন কাটছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটির। একদিকে সদস্যদের হতাশা, অন্যদিকে সামাজিকভাবে ‘অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার দুঃসহ অভিজ্ঞতা—সবকিছুই যেন একটি নতুন ধরনের সংকটের জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে আবার আত্মহত্যা, দুর্বৃত্তদের হাতে হামলা, এবং থানার ভেতর থেকে গ্রেপ্তার আসামির পলায়নের মতো ঘটনা পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যই এখনো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় নিগৃহীত হওয়া এবং সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্কের শৃঙ্খলা নষ্ট হওয়ার মতো সমস্যাগুলোও বাহিনীর অভ্যন্তরীণ পরিবেশকে জটিল করে তুলেছে। অভিযোগ উঠেছে, কারা ছাত্রলীগ, কারা দালাল বা ক্যাশিয়ার—এসব পরিচয়ে সদস্যদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, যা মনোবল ভেঙে দিচ্ছে। জুলাই বিপ্লবের পর থেকে পুলিশের বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যেও বড় ধরনের ছন্দপতন ঘটেছে। অনেক পুলিশ সদস্য তাদের পূর্বে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ ভোগ করতে পারছেন না। উপরন্তু, সামাজিক ও পেশাগত চাপে অনেকেই নিজেদের কাজের প্রতি মনোযোগ হারাচ্ছেন। সামাজিক আস্থার সংকট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক মনে করেন, পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে জনমনে আস্থার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে ভয় পাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলার অবনতি এড়াতে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের আরো সক্রিয় হওয়া জরুরি।” সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আবদুল কাইয়ুম বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের মধ্যে ভয়-আতঙ্ক কাজ করছে। তবে বর্তমান সরকার পুলিশের ইমেজ পুনরুদ্ধারে কাজ করছে। স্থানীয় নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নিয়মিত অনুপ্রেরণা পেলে বাহিনীর মনোবল কিছুটা ফিরে আসতে পারে।” অস্ত্র ও নিরাপত্তা ঘাটতি: জানা গেছে, বিভিন্ন থানায় লুট হওয়া অস্ত্রগুলোর বেশিরভাগই এখনো উদ্ধার হয়নি। এই অস্ত্রগুলো ব্যবহার করে দুর্বৃত্তরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এতে পুলিশের প্রতি জনসাধারণের আস্থা আরও কমছে। চট্টগ্রামে কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি নেজাম উদ্দীনের মারধরের ঘটনা কিংবা শরীয়তপুরের ওসি আল-আমিনের আত্মহত্যা পুলিশের অভ্যন্তরীণ সংকটের আরেকটি দিক তুলে ধরেছে। পুলিশ বাহিনীর উদ্যোগ: পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (অপারেশনস) মো. রেজাউল করিম জানান, “পুলিশ সদস্যদের মনোবল ফিরিয়ে আনতে মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে। সুশীল সমাজকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে জনগণের কাছে পুলিশের ইতিবাচক ইমেজ তুলে ধরার চেষ্টা চলছে।” সমাধানের পথে এগিয়ে চলা: সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, “পুলিশের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করার সুপারিশ আমরা করছি। ঔপনিবেশিক চিন্তাধারার বদলে পুলিশকে একটি কল্যাণমূলক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হবে।
Nema komentara