জাতিসংঘ মহাসচিবের জোরালো আহ্বান
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ প্রত্যাবর্তন এবং তাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আরাকান আর্মির সঙ্গে সংলাপে বসা এখন সময়ের দাবি। শনিবার (১৫ মার্চ) জাতিসংঘের মহাসচিব ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের এক যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গুতেরেস বলেন, "মিয়ানমারে লড়াই বন্ধ করা ও সেখানে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর চাপ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং পুরো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোকে একত্রিত করে একটি স্থায়ী সমাধান বের করা দরকার।"
তিনি আরও বলেন, "এই সমস্যার প্রথম ধাপ হবে সহিংসতা বন্ধ করা এবং এমন কার্যকর ব্যবস্থা গঠন করা, যা মিয়ানমারে প্রকৃত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ সুগম করবে। এতে স্বাভাবিকভাবেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন সহজ হবে।"
রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন চ্যালেঞ্জের মুখে
গুতেরেস আরও বলেন, "রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য এখনো কঠিন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমাদের মিয়ানমারের ভেতরে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে, যাতে প্রত্যাবর্তনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়।"
তিনি বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের জন্য একটি মানবিক সহায়তা চ্যানেল তৈরির সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেন। তবে তিনি বলেন, "এটি অনুমোদন ও সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল।"
একই সঙ্গে আরাকানে মানবিক সহায়তা দিতে করিডোর স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে এবং আমাদের পক্ষ থেকে এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ চলছে। মহাসচিবের সঙ্গে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটি একটি কার্যকরী প্যাটার্ন, যা আমরা অফিসিয়াল কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোকাবিলা করব।"
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ বৃদ্ধি অব্যাহত
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, "আমরা চাই রোহিঙ্গারা মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে নিজ দেশে ফিরে যাক। জাতিসংঘ মহাসচিবও একমত যে, এটি সঠিক পন্থা। আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘ এ বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করবে এবং সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র গঠনে সাহায্য করতে আগ্রহী।"
তিনি বলেন, "আমরা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রাখছি, যাতে তারা সঠিক অবস্থানে ফিরে আসে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের পথ তৈরি হয়।"
জাতিসংঘের এই আহ্বান নতুন করে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আশার আলো জাগালেও, বাস্তবায়নে কতটা অগ্রগতি হবে তা নির্ভর করবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			