'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিতে চান বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এই বিষয়ে দ্রুত সুস্পষ্ট ও দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘নির্বাচনী ইশতেহারে প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, "আওয়ামী লীগ জনগণকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালাতে চায়।"
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে আরও বলেন, "ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সুস্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে। শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে এ বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।"
নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে শফিকুল আলম অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, "ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এর জন্য সরকার সংশ্লিষ্ট সবাই দিনরাত পরিশ্রম করছেন।" তিনি আরও জানান, দেশজুড়ে এখন নির্বাচনের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে এবং অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি একটি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য কাজ করার কথা নিশ্চিত করেন।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সংস্কারের সময়সীমা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বাস্তবতার নিরিখে দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মানুষ সুশাসন চায়, তবে এটি একদিনে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
শফিকুল আলমের মতে, বিভিন্ন দেশে সংস্কার কার্যক্রমে ১০ থেকে ১৫ বছর সময় লেগেছে (নেপালে ৯ বছর লেগেছিল)। তাই তিনি মনে করেন, "আমাদেরও নির্বাচনের পর সংলাপের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হবে।"
'জুলাই সনদ'-এ নারী বা শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বের অভাব নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম সেই দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, "অনেকেই বলেন জুলাই সনদে নারী বা শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব নেই, কিন্তু বাস্তবে সব শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্বই সেখানে রয়েছে।"
এছাড়া প্রযুক্তি ও কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ইতোমধ্যেই শ্রমবাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। তাই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা পরবর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। অবকাঠামো উন্নয়নের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের যোগাযোগ অবকাঠামো আরও আধুনিক করতে রেল খাতে পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।
