কুমিল্লার সমাবেশে নুরুল হক নুর দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, স্বৈরাচারী অপশক্তি দেশকে অস্থির করতে চায়, জনগণের ঐক্যই পারে তাদের রুখে দিতে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় আওয়ামী লীগকে শুধু সীমিত নয়, স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় টাউন হল মাঠে এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা শুরু থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছিলাম। অথচ সরকার কৌশলে শুধু সীমিতভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। জাতীয় পার্টির মতো সহযোগী স্বৈরাচারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”
নুর বলেন, “গোপালগঞ্জে আমরা দেখেছি স্বৈরাচার কিভাবে দম্ভ দেখাতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থার চরম ব্যর্থতায় পাঁচজন মানুষের প্রাণ গেছে। এ ঘটনা স্পষ্ট প্রমাণ করে—স্বৈরাচারী সরকার দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়।” তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই এই পতিত শক্তিগুলো দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।
তিনি বলেন, “মাইলস্টোনের ঘটনাটি পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা শোকাহত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই ঘটনাকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগ এবং তার মিত্ররা ঢাকার রাজপথে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা তৈরি করেছে। ছাত্রদের উসকে দিয়ে সচিবালয়ের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই মিছিলে ছাত্রদের মধ্যে স্বৈরাচারের দোসররা ঢুকে সচিবালয়ে হামলা চালায়। এসব কর্মকাণ্ডে সরকার ও প্রশাসনের অসাড়তা স্পষ্ট হয়েছে।”
নুর আরও বলেন, “সরকার যদি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া জরুরি হয়ে পড়বে। ভবিষ্যতে দেশের স্বার্থে সর্বদলীয় বৈঠকের প্রয়োজন হবে এবং এ ধরনের বৈঠকে অংশ নেওয়া প্রত্যেক দলের অধিকার।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদের কুমিল্লা জেলার সভাপতি ফয়েজ উদ্দিন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান। নেতারা একযোগে সরকারের দুর্বলতা, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এবং অবৈধ ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান।
এই সমাবেশে অংশ নিয়ে হাজারো সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলে। বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ কেবল একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি এখন স্বৈরাচারের প্রতীক। এদের স্থায়ী নিষিদ্ধ না করলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হতে পারে।
নুরুল হক নুর তাঁর বক্তব্যে বারবার জনগণের ঐক্যের উপর জোর দেন এবং বলেন, “স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জনতার জয় হবেই, শুধু সাহস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।”