close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
আওয়ামী লীগের পতাকাতলে অবৈধ বিক্ষোভ করলে আইনের মুখোমুখি হতে হবে: শফিকুল আলম


প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম গতকাল (বুধবার) এক ফেসবুক পোস্টে একথা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের পতাকাতলে কেউ যদি ‘অবৈধ বিক্ষোভ’ করার সাহস করে, তবে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মুখোমুখি হতে হবে। তাঁর এই মন্তব্য সরকারের পক্ষ থেকে ‘সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার’ কোনো প্রচেষ্টা সহ্য করা হবে না বলে জানানো হয়। এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে এবং এর মাধ্যমে দেশে বিরোধী পক্ষের বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রতি সরকারের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে ঘোষিত কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে শফিকুল আলমের বক্তব্য
গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি পোস্টে ফেব্রুয়ারিতে দলটি নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে লিফলেট বিলি, প্রতিবাদ মিছিল, অবরোধ এবং সর্বাত্মক হরতাল। এই ঘোষণা নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে এবং আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি শফিকুল আলম উত্থাপন করেছেন।
তিনি উল্লেখ করেছেন, সরকার কোনোভাবেই সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য স্বাধীনভাবে কর্মসূচি পালনের সুযোগ দেবে না। “আমরা কখনোই দেশের শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি ক্ষুণ্ন করার কোনো প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি না,” তিনি বলেন।
২০১৩ সালের আন্দোলন ও অবৈধ কর্মসূচির পুনরাবৃত্তি
শফিকুল আলম বলেন, “গত কয়েক বছরে দেশে যে ধরনের সহিংস আন্দোলন ও হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তার দায়ী দলটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ। তাদের অধীনে রাষ্ট্রীয় শক্তির অপব্যবহার ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিপীড়নের অভিযোগের মুখে পড়েছে।” তিনি আরও বলেন, “গত বছর জুলাই এবং আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালিয়ে বহু নিরীহ জীবন কেড়ে নিয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, “এই হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সরাসরি দায়ী। এগুলো ছিল স্পষ্ট গণহত্যা, খুন ও তাণ্ডব, যার শিকার হয়েছেন সাধারণ জনগণ, শিক্ষার্থীরা, এমনকি নাবালক শিশুরাও।”
শফিকুল আলমের তীব্র আক্রমণ
শফিকুল আলম বলেন, “সরকারের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পতাকা তলে ‘অবৈধ’ কোনো বিক্ষোভ বা কর্মসূচি চালালে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বিশ্বের কোন দেশে একদল খুনি এবং দুর্নীতিবাজদের আবার ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে?”
এছাড়া, তিনি আরও জানান যে, এই সরকারের অধীনে অনেক অপকর্ম এবং দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার গুমের ঘটনা, হাজার হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা।
সরকারের অবস্থান: গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ
শফিকুল আলম আরও বলেন, “সরকার কোনো ধরনের সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড, এবং আইনবিরোধী কাজের প্রতি নমনীয়তা দেখাবে না।” তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ যদি তাদের গঠনতন্ত্র এবং সরকার পরিচালনার অধিকার থেকে বিচ্যুত হয়, তবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি কার্যকরী করা হবে না।
তিনি বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তাদের হত্যাকাণ্ড, গণহত্যা ও দুর্নীতির দায় স্বীকার করে না এবং তাদের নেতারা বিচারের সম্মুখীন না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের কোন ধরনের আন্দোলন বা বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হবে না।”
সাম্প্রতিক কর্মসূচির আওতায় জানানো তথ্য
আওয়ামী লীগ ১ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে লিফলেট বিলি, প্রতিবাদ মিছিল, সমাবেশ, অবরোধ এবং সর্বাত্মক হরতাল। এই কর্মসূচি সম্পর্কে শফিকুল আলম বলেন, “এ ধরনের কর্মসূচি অবৈধ এবং সহিংসতায় উস্কানি দেবে, যা কোনোভাবেই সরকার সহ্য করবে না।”
তবে, শফিকুল আলম আরও দাবি করেন, বর্তমান সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং এর অধীনে দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা হবে।
এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে, কারণ সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের মন্তব্য একদিকে যেমন বিরোধী দলকে আক্রমণ করেছে, তেমনি ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ যে ধরনের নীতি গ্রহণ করেছে তাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
Walang nakitang komento