close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত কার্যালয় দখল করে এনসিপির দলীয় অফিস ঘোষণা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চরফ্যাশনে পরিত্যক্ত আওয়ামী লীগ ভবন দখল করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিজেদের দলীয় কার্যক্রম শুরু করল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন, এলাকাজুড়ে উত্তেজনা।..

ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় ঘটে গেল এক নাটকীয় রাজনৈতিক মোড়!
শনিবার (১০ মে) দুপুরে কলেজ রোড এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এক সময়ের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের তিনতলা কার্যালয়ে হঠাৎ করেই দেখা যায় নতুন সাইনবোর্ড—"জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) – চরফ্যাশন উপজেলা শাখা।"

এই ভবনটি গত কয়েক বছর ধরেই ব্যবহারহীন অবস্থায় পড়ে ছিল। স্থানীয়রা জানান, সরকারের পতনের পর ঘটা রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংস হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের জেরে ভবনটি কার্যত পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

তবে শনিবার দুপুরে চরফ্যাশনের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দেন এনসিপির স্থানীয় নেতা অহিদ ফয়সাল।
তিনি নিজেকে “চরফ্যাশন উপজেলা প্রতিনিধি” পরিচয়ে একদল কর্মী-সমর্থকসহ ভবনটিতে প্রবেশ করে তা দখলে নেন। সাথেসাথে ভবনের সম্মুখভাগে টানানো হয় এনসিপির ব্যানার, শুরু হয় আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম।

এনসিপির দাবি কী?
এ বিষয়ে কথা বললে অহিদ ফয়সাল জানান, “চরফ্যাশনে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর জন্যই ভবনটি আমরা কাজে লাগাচ্ছি। দলে নতুন নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
তিনি আরও জানান, ভবনটি দখলের এই পদক্ষেপে তাঁকে সহায়তা করেছেন আমজাত হাবিব, নুরে আলম নাসিম, শরিফ হোসাইন এবং মো. শাহাবুদ্দিনসহ এনসিপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

আইনিভাবে এই দখল কতটা বৈধ?
তবে এনসিপির এমন আচরণকে ঘিরে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, রাজনৈতিক দল অফিস করতেই পারে, তবে যেভাবে হঠাৎ করে পরিত্যক্ত সরকারি দলের ভবনে ঢুকে একটি নতুন দল নিজেকে প্রতিষ্ঠা করল—তা একপ্রকার “ক্ষমতা প্রদর্শন” বলেই মনে করছেন অনেকে।

অনেকেই ভবনের মালিকানা ও দখলের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এক স্থানীয় নাগরিক বলেন, “এভাবে হঠাৎ করে কোনো পরিত্যক্ত রাজনৈতিক কার্যালয় দখল করা তো নিয়মসিদ্ধ নয়। ভবিষ্যতে এই নিয়ে বড় ধরনের গোলযোগ হতে পারে।”

আগাম সংকেত: উত্তপ্ত হতে পারে চরফ্যাশনের রাজনীতি
চরফ্যাশনের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা শুধু এনসিপির একক পদক্ষেপ নয়—বরং আসন্ন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত। যেভাবে এনসিপি সরকার পতনের পর সংগঠন বিস্তারে মাঠে নামছে, তাতে করে স্পষ্ট, ভবিষ্যতের রাজনীতিতে তারা জোরালো ভূমিকা রাখতে চায়।

অন্যদিকে এই দখল প্রক্রিয়ার কারণে আওয়ামী লীগ ও অন্য রাজনৈতিক শক্তিগুলোর প্রতিক্রিয়া কেমন হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে যদি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ কোনো দাবি তোলে বা প্রতিক্রিয়া জানায়, তা হলে চরফ্যাশনের মাটি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।



চরফ্যাশনে এনসিপির এই দখল ও দলীয় অফিস চালুর ঘটনা নিঃসন্দেহে বড় রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে। এর বৈধতা, প্রতিক্রিয়া এবং পরিণতি—সবকিছুই এখন সময়ের অপেক্ষা। তবে এটুকু নিশ্চিত, চরফ্যাশনের রাজনৈতিক মঞ্চে উত্তেজনার নতুন পর্ব শুরু হয়েছে।

Aucun commentaire trouvé