close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আইনজীবীর চাপে কাঁপছে সরকার! ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ, প্রশ্ন উঠেছে ‘আওয়ামী লীগ না এনসিপি?..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
এক সময় আওয়ামী লীগের টিকিট চান, আর এখন সরকারের বিরুদ্ধেই লিগ্যাল নোটিশ! ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির ভোট চাইতে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন রিগ্যান। এনসিপি কর্মীর পক্ষ নেওয়া ও সরকারের বিপক্ষে অবস্থানে শুরু বিতর্ক ..

সরকারের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠালেন আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী! উত্তাল ঢাকা দুই সিটির ভোট দাবি নিয়ে রাজনৈতিক জটিলতা

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন না হওয়াকে কেন্দ্র করে ফের আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান। এক সময় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তিনি, আর এখন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়ে দাবিতে সরব — ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের শিডিউল দ্রুত ঘোষণা করতে হবে।

গত ২২ মে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মী হোসাইন মোহাম্মদ আনোয়ারের পক্ষে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান অ্যাডভোকেট রিগ্যান। এক সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় সরকারকে।

নোটিশে কী ছিল?

নোটিশে বলা হয়েছে, বর্তমানে দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়রের মেয়াদ শেষ হলেও নতুন নির্বাচন না হওয়ায় প্রশাসক দিয়ে চলেছে কার্যক্রম। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে এবং নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বিশেষভাবে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণের তৎকালীন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং উত্তরের আতিকুল ইসলাম উভয়েই ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যান। পরে ১৯ আগস্ট তাদের পদ শূন্য ঘোষণা করে প্রশাসক বসানো হয়। এ অবস্থায় ২ কোটি মানুষের নাগরিক অধিকার হুমকিতে পড়েছে।


আওয়ামী লীগ না এনসিপি: দ্বৈত পরিচয়ে তীব্র সমালোচনা

এক সময় আওয়ামী লীগ থেকে এমপি হতে চাওয়া সালাহ উদ্দিন রিগ্যান বর্তমানে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। আওয়ামী লীগ ও এনসিপির সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি ক্ষমতার অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ইঙ্গিত।

২০ মে সালাহ উদ্দিন রিগ্যান একই দিনে দুটি চিঠি পাঠান — একটি ১৪ দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে, অপরটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর, যাতে দ্রুত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলা হয়। এনসিপির কর্মী আনোয়ার সেই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন, যা এনসিপির নিজস্ব অবস্থানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।


রিগ্যানের অতীতও বিতর্কময়

আলোচিত এই আইনজীবী এর আগেও কয়েকবার বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন। ২০২৩ সালের মার্চে সুপ্রিম কোর্টে সহিংসতার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই বছরের ১৫ মার্চ তাকে ডিবি পুলিশ দোয়েল চত্বর থেকে গ্রেফতার করে। পরে তিনি জামিন পান।

জামিনের পর তার স্ত্রী জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মন্তব্য করায় রিগ্যানকে সরকারবিরোধী ভাবা হয়। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলএম-এর ব্যাংকিং ল’ অ্যান্ড কর্পোরেট পলিসি প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী ছিলেন বলেও জানান তার স্ত্রী।


সংসদে ঢোকার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও আবেদন

রিগ্যান এবার সরাসরি নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার চেয়েছেন। ১৪ মে তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব আইন সংশোধনের দাবি তুলে একটি আবেদনপত্র পাঠান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে। সেখানে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেন।

এই আবেদনের কপি পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনার, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য, অধ্যাপক আলী রিয়াজসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে।


লক্ষ্মীপুরের মামলাও আলোচনায়

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সেনা সদস্য মঞ্জুরুল আলমের ওপর হামলার ঘটনায় রিগ্যান গ্রেপ্তার হন। যদিও পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান, কিন্তু এসব ঘটনায় তার চারপাশে বিতর্কের ধোঁয়াশা আরও ঘন হয়।


শেষ কথা: রাজনৈতিক মাঠে নতুন অঙ্কের সূচনা?

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে এই আইনি চাপ প্রয়োগ শুধু একটি সাধারণ দাবি নয় — এটি যেন নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতারও ইঙ্গিত দেয়। রিগ্যানের মতো একজন আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এখন সরকারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামছেন, আর এনসিপির ব্যানারে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন — এসব প্রশ্ন তো তোলে বটেই:
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ গঠনেই কি ভাঙন শুরু হলো? নাকি রিগ্যান হচ্ছেন নতুন যুগের রাজনৈতিক প্যাঁচের খেলোয়াড়?

সময়ই দেবে এর জবাব, তবে আপাতত ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক চাপ বাড়ছেই।

Tidak ada komentar yang ditemukan