মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে এবছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। এই ফলাফলে বিশ্বজুড়ে চমক তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প নিজেও বহুবার এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছিলেন এবং নিজের অবদানের কথাও তুলে ধরেছিলেন। তাঁর দাবি—তিনি বিশ্বের সাতটি বড় যুদ্ধ বন্ধ করেছেন, যা মানবজাতির জন্য এক বিশাল সাফল্য।
তবুও নোবেল কমিটি যখন পুরস্কারের ঘোষণা দেয়, ট্রাম্পের প্রত্যাশা ভেঙে যায়। ইতিহাসে এখন পর্যন্ত শান্তির নোবেল পেয়েছেন মাত্র চারজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যার মধ্যে অন্যতম বারাক ওবামা। এবার সেই তালিকায় জায়গা হয়নি ট্রাম্পের, যা তাঁকে কিছুটা হতাশ করেছে।
তবে শুক্রবার সন্ধ্যায় এক বক্তব্যে ট্রাম্প চমকপ্রদ দাবি করেছেন—নোবেলজয়ী মারিয়া কোরিনা মাচাদো নাকি তাঁকে ফোন করে জানিয়েছেন, তিনি এই পুরস্কারটি ট্রাম্পের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গ্রহণ করেছেন। ট্রাম্প বলেন, “যিনি নোবেল পেয়েছেন, তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন এবং বলেছেন—এই পুরস্কারটি আপনার প্রতি সম্মান জানিয়ে নিচ্ছি, কারণ প্রকৃত অর্থে আপনি-ই এর যোগ্য।”
ট্রাম্প আরও যোগ করেন, “আমি তাকে বলিনি ‘আমাকে পুরস্কারটা দিন’, কিন্তু আমার মনে হয় তিনি হয়তো দিলে দিতে পারতেন।” তাঁর কণ্ঠে শোনা গেছে আত্মবিশ্বাস ও খানিকটা গর্বের সুর।
অতীতে মারিয়াকে সহযোগিতা করার বিষয়েও কথা বলেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “আমি তাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে আসছি। ভেনেজুয়েলা এখন ভয়াবহ এক সংকটের মধ্যে আছে, দেশটি মূলত এক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি দেশটির মানুষ যেন স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারে।”
তিন সন্তানের জননী মারিয়া কোরিনা মাচাদো বহুদিন ধরে ভেনেজুয়েলার স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন। নিজের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েও তিনি দেশে আত্মগোপনে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক মহল তাঁর সাহসিকতা ও নেতৃত্বগুণের প্রশংসা করে আসছে। এই নোবেল জয়ে তাঁর রাজনৈতিক সংগ্রাম নতুন মাত্রা পেল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ট্রাম্পের এই দাবি—মারিয়া নাকি তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নোবেল নিয়েছেন! যদিও বিষয়টি নিয়ে নোবেল কমিটি বা মারিয়া নিজে কোনো মন্তব্য করেননি। তবু এই দাবি ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ট্রাম্পের মন্তব্যে যেমন তাঁর সমর্থকেরা উচ্ছ্বসিত, তেমনি বিরোধী শিবিরের কাছে এটি আবারও তাঁর আত্মপ্রচারমূলক আচরণের প্রমাণ। কিন্তু একথা অনস্বীকার্য যে, নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘিরে ট্রাম্পের বক্তব্যে আবারও বিশ্বমিডিয়ার দৃষ্টি তাঁর দিকেই ঘুরে গেছে।