ঢাকার মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে শিশু প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয়বিদারক বার্তা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। আহত শিক্ষার্থীদের সাহসিকতা আর ইউনূসকে চিঠির ঘোষণা আলোচনায়।
ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে বহু শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত এক বার্তায় জানান, “ঢাকায় একটি স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর জানার পর আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। আমি বাংলাদেশের মানুষের জন্য গভীরভাবে শোকাহত।”
আনোয়ার ইব্রাহিম উল্লেখ করেন, “এই ঘটনায় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু। আহত হয়েছেন শতাধিক, যা শুধু একটি দেশের নয়, গোটা মানবজাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”
এই ঘটনায় এক সাহসী শিক্ষকের কথা তুলে ধরেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মাহরীন চৌধুরী নামে এক শিক্ষক নিজের জীবন বাজি রেখে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যান। এরপর সাহসিকতার সঙ্গে আবার ধোঁয়া ও আগুনের মধ্যে ফিরে গিয়ে আরও প্রাণ রক্ষা করার চেষ্টা করেন। তার অসাধারণ সাহসিকতা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও জানান, “আমি নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে একটি চিঠি লিখব, যাতে বাংলাদেশের ভাই-বোনদের প্রতি মালয়েশিয়ার সংহতি এবং সহানুভূতি জানানো যায়।”
এছাড়াও আনোয়ার ইব্রাহিম তার শোকবার্তায় উল্লেখ করেন, “আমরা এই শোকের সময়ে আপনাদের সঙ্গে আছি। প্রতিটি হারানো প্রাণের জন্য আমরা ব্যথিত, এবং প্রতিটি বিপর্যস্ত পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি।”
বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক ও মানবিক নেতারা এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এটি স্থান পেয়েছে অন্যতম বড় মানবিক ট্র্যাজেডি হিসেবে। মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এখনও শোকে পাথর হয়ে আছেন। অনেকে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই ধরনের দুর্ঘটনার ভবিষ্যত প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে, যাতে আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেন এমন ভয়াবহ বিপর্যয়ের শিকার না হয়।
এটি শুধু একটি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা নয়, বরং এটি একটি জাতির হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করেছে। শিশুদের মৃত্যু, সাহসী শিক্ষকের আত্মত্যাগ এবং বিশ্বনেতার সহানুভূতি — সব মিলে এটি একটি ঐতিহাসিক দুঃখজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে বাংলাদেশের জন্য।